Tuesday, January 3, 2012

লেখালেখি করে আয়

লেখালেখি করে আয়
লেখকের নাম: হাসিনুল ইসলাম
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে আর্টিকেল রাইটিং বা কনটেন্ট রাইটিং হচ্ছে দ্রুত প্রসারমাণ ও সম্ভাবনাময় একটি ক্ষেত্র। যারা ইংরেজিতে দক্ষ তারা এই ধরনের কাজ করে মাসে বেশ ভালো অঙ্কের আয় করতে পারেন। বাংলাদেশে অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন, যারা নিজের ভাষাগত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে এ ধরনের কাজগুলো সফলতার সাথে করছেন। এরা একে মূল পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

আর্টিকেল রাইটিংয়ে অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং লেখালেখি শুরু করার আগে প্রথমে কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রথমত, ইংরেজি বানান এবং ব্যাকরণ সঠিকভাবে জানা থাকতে হবে, বিশেষ করে কমপ্লেক্স ও কম্পাউন্ড বাক্য ঠিকভাবে লেখার যোগ্যতা থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, এখানে পারিশ্রমিক হিসেবে ঘণ্টায় ন্যূনতম ১ ডলার থেকে ৩ ডলার পাবেন। তৃতীয়ত, কোনো কোনো মাসে হয়তো প্রতিদিন ১-২ ঘণ্টার কাজ, আবার কখনো হয়তো দিনে ৮-৯ ঘণ্টার কাজও করতে হতে পারে।

কাজের ধরন

আর্টিকেল রাইটিংয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ থাকলেও এই লেখায় চার ধরনের কাজ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রথম দুই ধরনের কাজ কম পারিশ্রমিকের। বাকি দু’টি বেশি পারিশ্রমিকের। স্বাভাবিকভাবেই আপনার ভাষাজ্ঞান কম হলে, যোগ্যতা কম থাকলে পরের দু’টি কাজ পাবেন না। কম পারিশ্রমিকের কাজ দু’টি হলো :

০১. Rewriting এবং
০২. Snippet বা Short Article Writing।

এক কথায় Rewriting হলো একটি ৩০০-৬০০ শব্দের লেখার মূল তথ্য ঠিক রেখে আর্টিকেলটিকে নিজের ভাষায় লেখা যেন পরের লেখাটি প্রথম লেখার নকল না হয়।

আর Snippet বা Short Article Writing হলো কোনো বিষয়ে ১০০-১৭০ শব্দের লেখা তৈরি করা। এক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট একটি বিষয়ের ওপরই ৫, ১০, ২০ অথবা ৩০টি লেখা চাইতে পারে।

বেশি পারিশ্রমিকের কাজ দু’টি হলো :

০১. আর্টিকেল রাইটিং বা কনটেন্ট রাইটিং এবং
০২. প্রুফরিডিং ও এডিটিং।

এক কথায় আর্টিকেল রাইটিং বা কনটেন্ট রাইটিং হলো কোনো বিষয়ে ৪০০-৬০০ শব্দের লেখা তৈরি করা, যা কোনোভাবেই কোথাও থেকে হুবহু নিয়ে তুলে দেয়া যাবে না। এটি ধরা পড়লে এক্ষেত্রে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে।

আর Proof reading হলো কোনো লেখার বানান, গ্রামার, স্টাইল ইত্যাদির ভুল শুধরে দেয়া। এর সাথে এডিটিং হলো লেখাটিকে আরো আকর্ষণীয় ও শুদ্ধ করে তোলা।

কী পরিমাণ আয় হতে পারে?

আয় নির্ভর করবে ৩টি বিষয়ের ওপর :

০১. কতটা কাজ পাচ্ছেন,
০২. কাজের রেট কেমন এবং
০৩. আপনি প্রতিদিন কত ঘণ্টা সময় দিতে পারছেন।

ধরুন, রিরাইটং কাজের কথা। প্রায় প্রতিদিনই এমন কাজের বিজ্ঞপ্তি থাকে। ধরুন, নিম্নতম রেট ৫০০ শব্দের রিরাইটিং ৫০ সেন্ট বা হাফ ডলার। একটি কাজ করতে প্রথম প্রথম আধাঘণ্টা বা বেশি সময়ও লাগবে। আপনার ভাষাজ্ঞান ভালো ও টাইপিং স্পিড বেশি হলে ৩টি বা প্রায় ৪টি করতে পারেন এক ঘণ্টায়। তবে এই কাজ ১ ডলার রেটেও বেশ থাকে। কখনো তা দেড় বা দুই ডলার রেটে থাকে।

ঘণ্টায় ২ ডলারের কাজ করলে, ৩ ঘণ্টায় ৬ ডলার অর্থাৎ মাসে ১৫০ ডলার (১৮০ নয়, কারণ সপ্তায় একদিন বাদ দিয়ে ধরলে হিসাবটি বাস্তব) হবে। এটি হচ্ছে ন্যূনতম আয়। যদি আপনি ভাষাগত দক্ষতা প্রমাণ করতে পারেন। আর হ্যাঁ, ভালো রেটে কাজ পেলে তা অবশ্যই বেশি হবে। যেমন, একজন কাজ পেল ৬ মাসের জন্য প্রতিদিন ৪ আর্টিকেল গুণ ৩ রিরাইটিং = 4x$3 এর। তাহলে এই এক কাজেই প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা খেটে ১২ ডলার গুণ ৩০ = ৩৬০ ডলার পাবে। আমেরিকান এমপ্লয়ারও সপ্তায় একদিন হয়তো কাজ করবে না, হয়তো কাজ দিয়ে রাখবে।

তাহলে যা দাঁড়ালো : প্রতিদিন ৩-৪ ঘণ্টা সময় দিলে ১৫০-৪০০ ডলার আয় করতে পারেন। ফুলটাইম সময় দিলে হাতে কাজ থাকলে ২.৫ ডলার গুণ ৮ ঘণ্টা গুণ ২৮ দিন = ৫৬০ ডলার হতে পারে। এসব হলো কম রেটের রিরাইটিংয়ের কথা। ৫০০-৬০০ শব্দের আর্টিকেল রাইটিংয়ের রেট গড়ে ২.৫ ডলার এবং প্রায়ই ৩-৫ ডলারও হয়ে থাকে। ভালো মানের আর্টিকেল রাইটিংয়ের কাজ পারলে মাসে ৮০০-র বেশি ডলার আসতে পারে।

তবে সব মাসে একইভাবে কাজ থাকবে না- একথা মাথায় রাখতে হবে। কোনো মাসে প্রতিদিন এক-দুই ঘণ্টার বেশি পরিমাণ কাজ না থাকতে পারে, আবার কোনো মাসে দিনে ১৫ ঘণ্টা কাজ করার মতো কাজ পেতে পারেন। কতটুকু পারবেন এবং করবেন, কতখানি কাজ করলে কোয়ালিটি ধরে রাখতে পারবেন, কতটুকু লাভ করবেন- সব নির্ভর করে আপনার ওপর।

কতটুকু শ্রম দিতে হবে?

লেখাটি ইংরেজিতে দক্ষ হয়েও যারা বেকার তাদের জন্য। আপনাকে ধরে নিতে হবে আপনি এক ঘণ্টায় ১৫০০ বা আরো বেশি শব্দ টাইপ করতে পারবেন। দ্রুত একটি লেখা পড়ে আরেকটি লেখা লিখতে পারবেন। ক্লান্তি কতখানি সামাল দিতে পারবেন, কত ঘণ্টা এভাবে কাজ করবেন, তা নির্ভর করছে আপনি কতখানি কাজ পাচ্ছেন এবং নিজে কতক্ষণ করতে পারছেন, তার ওপর। আর শ্রম কতটুকু দিতে হতে পারে তা আগের বর্ণনা থেকে নিশ্চয় বুঝে ফেলেছেন।

টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তা কতখানি?

নিচে উল্লেখ করা দু’টি সাইট থেকেই বাংলাদেশীরা টাকা ঘরে তুলছেন। এ ব্যাপারে এখন আর কোনো দ্বিধা নেই। পদ্ধতি সম্বন্ধে কথা বলা হবে সবশেষ ৭ম পর্বে।

ওডেস্কডটকম-এ দু’ধরনের কাজের মধ্যে একটির ক্ষেত্রে কখনো কখনো টাকা মার যায়। এ কাজগুলো ফিক্সড প্রাইস ধরনের। সাবধানতার জন্য এমপ্লয়ারের অতীত কাজের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করে নিতে হবে। ছোট ছোট ভলিউমে কাজ পাঠিয়ে ধাপে ধাপে পেমেন্ট নিতে হবে। আর ফ্রিল্যান্সারডটকম-এ আবেদনের সময় কিছু অংশ এস্ক্র করে নিতে হবে অর্থাৎ এমপ্লয়ার কিছু ডলার ওই সাইটে গ্যারান্টি হিসেবে জমা রাখবেন।

কতখানি যোগ্যতা প্রয়োজন?

প্রথমত : ধৈর্য।

দ্বিতীয়ত : শুদ্ধ বানান। এক্ষেত্রে এমএস ওয়ার্ডের স্পেল চেকারের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। আমেরিকান স্পেলিং শুদ্ধভাবে জানতে হবে।

তৃতীয়ত : শুদ্ধ গ্রামার। ছোট, মাঝারি ও লম্বা বাক্য লিখতে হবে। কখনো কখনো আমেরিকান গ্রামারই চাইবে।

চতুর্থত : উপস্থাপন দক্ষতা। নিজেকে আবেদনপত্রে ভালোভাবে তুলে ধরতে হবে।

পঞ্চমত : যোগাযোগ দক্ষতা। প্রতিদিন দু’বার মেইল চেক করতে হবে। দ্রুত উত্তর দিতে হবে।

ষষ্ঠত : ডেডলাইন সচেতনতা। কাজ সঠিক সময়ের আগেই প্রস্ত্তত করতে হবে যেনো এমপ্লয়ারের কাছে যেতে দেরি না হয়।

সপ্তমত : টাইপের কাজ হয় এবং ইন্টারনেট মোটামুটি ভালোই চলে এমন কমপিউটার।

অষ্টমত : টাইপিং স্পিড যত ভালো তত ভালো।

নবমত : আপনি http://www.ezinearticles.com-এর লেখা পর্যবেক্ষণ করে সেখানে কয়েকটি আর্টিকেল পাবলিশ করে রাখতে পারেন। কাজের আবেদনের সময় সেই লেখার লিঙ্ক দিতে পারেন আপনার লেখার নমুনা দেখানোর জন্য। সেখানে পাবলিশ না করলেও সেরকম মানের লেখা তৈরি করে রাখতে হবে কয়েকটি, যেনো নমুনা হিসেবে দেখাতে পারেন।

আমি কি কাজ পাবো?

ভারতীয় আর ফিলিপিনোদের সাথে কুলাবো কিভাবে?

এ ধরনের আশঙ্কা অমূলক নয়। বহু ফ্রিল্যান্সিং অ্যাডভার্টে স্পষ্ট লেখা থাকে : Filipinos preferred। কারণ এরা কমিটেড, ডেডিকেটেড, এমপ্লয়ারের কাজে ফাঁকি কম দেয় এবং কম রেটে কাজ করে দেয়। এছাড়া এরা ওয়েবসাইটে ব্যবহার হওয়া ইংরেজি ভালো বোঝে। নিজেকে আপ-টু-ডেট রাখে। এই ফিলিপিনো এবং ভারতীয়রা খুব কম রেটে কাজ করে দেয়। এরাই ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজের রেট কমিয়েছে। এদের সাথে পাল্লা দিতে হলে তাদের কাছাকাছি রেটে কাজ করতে হবে, তবে আপনার ভাষাগত দক্ষতা খুব ভালো থাকলে তা করতে হবে না। আপনি ওদের করা কাজের চেয়ে বেশি রেটের কাজ করতে পারবেন। কিন্তু একই কাজে যদি ওরা ৫০ সেন্টে একটি ৪০০ শব্দের লেখা পুনর্লিখন করে দিতে চায় এবং এমপ্লয়ারের অতীত ইতিহাসও যদি তেমন হয়, তাহলে আপনার ইংরেজি ভালো হলেও আপনাকে অবশ্যই ১ ডলার বা এমনকি ৬০ সেন্টে কাজটি দেবে না।

আপনাকে এক্ষেত্রে এমপ্লয়ারের অতীত কাজের রেট সম্বন্ধে ধারণা নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। অন্য আবেদনকারীদের গড় রেট কেমন বা প্রত্যেকের রেট কত ওই কাজের জন্য তা দেখতে হবে। এরপর আপনার রেট ঠিক করতে হবে।

এছাড়া ইংরেজির বিভিন্ন পরীক্ষাগুলো ভালো স্কোরসহ পাস করে ভারতীয় ও ফিলিপিনোদেরকে পেছনে ফেলতে হবে।

এছাড়া যত ছোট বা বড় কাজই পান, এমপ্লয়ারের সাথে সঠিক যোগাযোগ রাখতে হবে, কাজের মান খারাপ করা চলবে না। এমপ্লয়ারের দেয়া ফিডব্যাক রিপোর্ট খারাপ করা চলবে না। আপনি চাইলেই ওই দু’দেশের লোককে পেছনে ফেলতে পারবেন।

এছাড়াও আপনি ezinearticles.com সাইটটি পর্যবেক্ষণ করে সেখানে কয়েকটি আর্টিকেল পাবলিশ করে রাখতে পারেন। কাজের আবেদনের সময় সেই লেখার লিঙ্ক দিতে পারেন আপনার লেখার নমুনা দেখানোর জন্য। এভাবে আপনি এমপ্লয়ারের মন কাড়তে পারেন। নিজের ব্লগ সাইট থাকলে তার রেফারেন্স দিতে পারেন। এভাবেই আপনার চাহিদা তৈরি করে নিতে হবে।

কাজ পাওয়ার জন্য শুধু দু’টি সাইটের উদাহরণ দিন

বেশ কিছু সাইট থাকলেও আমার জানামতে দু’টি সাইটে অনেক বাংলাদেশী সফলভাবে ইংরেজি লেখালেখির কাজ করছেন।

প্রথমত : http://www.freelancer.com সাইট।
দ্বিতীয়ত : http://www.odesk.com সাইট।

এখানে যে দু’টি সাইটের উল্লেখ করা হলো, আপনি এখন এই সাইট দু’টিতে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করবেন পরীক্ষামূলক। আপনার পূর্ণাঙ্গ নাম- ঠিকানাসহ রেজিস্ট্রেশন পরে করবেন, যখন আপনি নিজেকে প্রস্ত্তত করে ফেলবেন। এই পরামর্শটি হয়তো কিছুটা অনৈতিক মনে হতে পারে, কিন্তু আমরা বাংলাদেশীরা প্রায়শই তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে খারাপ অবস্থান তৈরি করি। কাল থেকে শুরু করুন এবং এই লেখার ৭ম পর্ব প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত কাজগুলো করতে থাকুন। আরো বেশি সময় লাগাটাই স্বাভাবিক। দেশে একটি চাকরির জন্য কতটা সময় ধরে প্রস্ত্তত হতে হয়, তার সাথে তুলনা করলে এটুকু সময় খুব অল্প।

এই পরীক্ষামূলক অ্যাকাউন্ট দিয়ে আপনি সাইট দু’টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিচের বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করবেন :

০১. লেখালেখি অংশে কী ধরনের কাজের বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে। আপনি rewriting, snippet, short article, proofreading শব্দগুলো দিয়ে সার্চ করতে পারেন। http://www.i-freelancer.org সাইটটিতে সার্চ করলে একসাথে সব ফ্রিল্যান্সিং সাইটে থাকা কাজের ফলাফল দেখাবে। মূল কথা হলো, বিজ্ঞাপনগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়বেন।

০২. যারা আবেদন করছেন তাদের যোগ্যতা কেমন তা জানার চেষ্টা করবেন। আবেদনকারীরা কোন দেশের তা http://www.freelancer.com সাইটে সরাসরি দেশের পতাকা দেখে বুঝতে পারবেন। এছাড়া দু’টি সাইটেই আবেদনকারীদের প্রোফাইল দেখে অনেক কিছু বুঝতে পারবেন।

০৩. কোন ধরনের কাজে রেট কেমন তা বুঝতে হবে।

০৪. এছাড়াও সাপোর্ট ফোরামে ঢুকে বিভিন্নজনের বিভিন্ন সমস্যার ব্যাখ্যাগুলো পড়তে হবে যেনো কিছু সমস্যা সম্পর্কে আগাম অনুধাবন করতে পারেন।

০৫. এছাড়াও ফ্রি পরীক্ষা দেয়ার যতটুকু সুযোগ আছে তা কিছুটা সময় নিয়ে ব্যবহার করুন। এতে করে বুঝবেন আপনার ইংরেজি ভাষাজ্ঞানের দুর্বলতাকে কাটাতে কোন ক্ষেত্রে মনোযোগ দিতে হবে। আপনার ভাষাগত দক্ষতা অবশ্যই বাড়াতে হবে। ওডেস্ক সাইটটিতে চমৎকার সব ফ্রি পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। সেসব পরীক্ষায় ভালো করার জন্য নিজেকে প্রস্ত্তত করতে হবে।

তাহলে ওই দু’টি সাইটে পরীক্ষামূলকভাবে অ্যাকাউন্ট ওপেন করে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করুন। এই লেখার ৭ম পর্ব পর্যন্ত ধৈর্য ধরে পড়ুন, নিজেকে চিনুন, আপনি অলস না পরিশ্রমী পরখ করে নিন, নিজেকে তৈরি করুন।

রিরাইটিং কাজটি আসলে কী?

রিরাইটিং শব্দটির আক্ষরিক বাংলা হলো পুনর্লিখন। কাজটিও আক্ষরিক অর্থে তাই। যেমন : মূল বাক্য যদি হয় These licenses require that the student completes a predetermined number of education hours. আপনার পুনর্লিখিত বাক্য হতে পারে If you want a license of this type, you must have completed a predetermined hours of education.

মূল কথা হলো, আপনার পুনর্লিখিত বাক্যে একই কথা বলা হবে কিন্তু ‘শব্দচয়ন ও গ্রামারগত পার্থক্য থাকবে’ যাতে করে মনে হয় দু’টি লেখা একে অন্যের নকল নয়।

এখানে বাংলাদেশীরা যে সমস্যার মুখোমুখি হন, তা হলো লেখাগুলোর বিষয়বস্ত্তর ভিন্নতা। বেশিরভাগ বিষয় হবে স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, ইন্স্যুরেন্স, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদিনির্ভর। আপনাকে এগুলো দ্রুত পড়ে বুঝে উঠতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং কাজে রিরাইটিং কত রকম হতে পারে?

আপনাকে ৩২০-৬০০ শব্দের একটি লেখা দেয়া হলে সেটির তথ্য ঠিক রেখে আপনার ভাষায় তা লিখতে হবে নিচের দুটি উপায়ের যেকোনো একভাবে। এমপ্লয়ার যেভাবে চাইবে সেভাবে করতে হবে।

প্রথম ধরন :
প্রতিটি বাক্যকে পুনর্লিখন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি বাক্যের পরপরই আপনার লেখা বাক্যটি লিখতে হতে পারে। অর্থাৎ মূল লেখার ভেতরেই rewritten article বা পুনর্লিখিত লেখাটি থেকে যাবে। অথবা এক প্যারার সব বাক্যকে আলাদা আলাদা পুনর্লিখনের পর প্যারা হিসেবে সাজাতে হতে পারে। এরপর পুনর্লিখিত পুরো লেখাটি আলাদাভাবে দেখা যাবে।

দ্বিতীয় ধরন :
অথবা একেক প্যারাগ্রাফ হিসেবে পুনর্লিখন করতে হবে। এরপর মূল লেখাটিও রিরাইটেন আর্টিকেলটি আলাদাভাবে তুলে ধরতে হবে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি লেখা একবার রিরাইটিং বা পুনর্লিখন চাওয়া হয়। একে বিজ্ঞাপনে rewriting x 1 হিসেবেও তুলে ধরা হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে মূল আর্টিকেলটি পৃষ্ঠার উপরে রাখতে হবে। তার পরে insert  page break দিয়ে পরের পৃষ্ঠায় আপনার রিরাইটেন আর্টিকেলটি দেবেন। আপনার রিরাইটেন আর্টিকেলটির ফন্ট কালার ভিন্ন রাখতে পারেন।

আবার অনেক সময় একটি আর্টিকেলের দুইবার বা তিনবার রিরাইটিং চাওয়া হয়। একে বিজ্ঞাপনে যথাক্রমে rewriting x 2 এবং rewriting x 3 হিসেবেও তুলে ধরা হয়। পেমেন্ট বেশিরভাগ প্রতি একবার রিরাইটিং অনুযায়ী হয়ে থাকে।

Rewriting x 1-এর উদাহরণ

বাক্যের ভিত্তিতে rewriting x 1-এর উদাহরণ :

This is becoming increasingly popular because you can complete assignments and tests from home. {The popularity of the courses lie in the fact that one can complete these courses staying at home.}

আপনার rewritten article-এর uniqueness এবং কীওয়ার্ড ডেনসিটি মাপার সহজ উপায় একটি ফ্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করা। এটি হলো : DupeFreePro-এর সাইজ কত তা জানা নেই, তবে খুব বড় মনে হয় না। এটির লিঙ্ক হলো : http://www.dupefreepro.com

সফটওয়্যারটিতে পাশাপাশি দুই উইন্ডোতে আপনাকে পাঠানো মূল আর্টিকেল এবং আপনার করা রিরাইটেন আর্টিকেলটি পেস্ট করে compare বাটনে চাপ দিলেই দেখাবে কত শতাংশ মিল আছে। অবশ্য এই মিলটি কতখানি হচ্ছে, তা দেখাবে আপনার নির্দিষ্ট করে দেয়া মাপকাটির ভিত্তিতে। আপনি করতে পারেন sentence লেভেলে, ৪ words বা ৩ words ইত্যাদির ভিত্তিতে। সাধারণত sentence ভিত্তিতে আপনার লেখাটি ইউনিক কি না অর্থাৎ ০% মিল আছে কি না, তা চেক করে নিতে পারেন। অভিজ্ঞতা হয়ে গেলে তার আর প্রয়োজন নাও হতে পারে।

এই সফটওয়্যারটি আরেকটি কাজ করে দেয়। সেটি হলো কীওয়ার্ড ডেনসিটি মেপে দেয়া। আপনার রিরাইটিং আর্টিকেলটি সফটওয়্যার উইন্ডোতে দিয়ে keyword বক্সে keywordটি দিয়ে calculate keyword density বাটন চাপলেই উত্তর পেয়ে যাবেন। অনেক এমপ্লয়ার এটি চাইবে।

স্নিপেট বা শর্ট আর্টিকেল লেখার কাজটি আসলে কী?

স্নিপেট বা ব্লারব বা শর্ট আর্টিকেল রাইটিং আসলে যেকোনো বিষয়ের ওপরে ছোট ছোট লেখা। অবশ্য হতে পারে কিছু প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে করা খন্ডিত কোডিং। আমরা এখানে সে বিষয়ে যাচ্ছি না। আমরা এখানে স্নিপেট বলতে শর্ট আর্টিকেল বুঝব।

কত বড় হতে পারে এমন লেখা? সাধারণত ১০০-১২৫ শব্দের। কখনো ৭০-১৬৫ শব্দের হতে পারে।

কাজের রেট কেমন হয়? লেখা প্রতি সাধারণত ৩০ সেন্ট থেকে ১.২ ডলার হয়ে থাকে।

কী কী বিষয়ে লিখতে হয়? যেকোনো কিছু যার মাধ্যমে কোনো সাইট ভালো হয়। অর্থাৎ এসব শর্ট আর্টিকেলের মধ্যে থাকবে কোনো কীওয়ার্ড, যা একবার বা একাধিকবার ব্যবহার করতে হবে। বিষয় হতে পারে : coffee shop, hair trimmer, paint box, best aluminum plate, dog cure, baby cot, lose weight, control diabetes, BB features, how to setup Wordpress ইত্যাদি যেকোনো কিছু। এগুলো শুধু ধারণা দেয়ার জন্য বলা হলো। অর্থাৎ আপনাকে প্রস্ত্তত থাকতে হবে ইন্টারনেট থেকে দ্রুত কিছু দেখে নিয়ে লেখাগুলো তৈরি করার জন্য।

কীওয়ার্ড ব্যবহার কিভাবে করতে হবে? নিচে উদাহরণে দেখুন আন্ডারলাইন করা কীওয়ার্ড কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

লেখা কি খুব তথ্যবহুল হতে হবে?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মোটামুটি লেখা, ভুল তথ্য না থাকলেই হয়, চলে। তবে কখনো বলে দেবে যে তথ্যবহুল হতে হবে।

এ ধরনের কাজ কি প্রতিনিয়ত পাওয়া যায়?

না, এই কাজ মাসে কয়েকবার পাওয়া যেতে পারে। রিরাইটিং ও আর্টিকেল রাইটিংয়ের মতো অত ঘন ঘন পাওয়া যাবে না।

এবার দু’টি জব বিজ্ঞাপন দেখুন, যার মধ্যে দ্বিতীয় কাজটি করেছেন একজন বাংলাদেশী :

প্রথম বিজ্ঞপ্তি :

150 Words Article Writer Fixed-Price - Est. Budget: $10.00
Job scope:

১) Write 30x Articles regarding the Keywords given

২) Every article has to be unique and pass through copyscape

৩) Minimum word length is 150

৪) Receive $0.35 per article ($10.50 for 30 articles)

৫) A sample of your work before letting me to hire you is appreciated

কী ধরনের লেখা লিখতে হবে?

Article writing এবং Content writing বলতে কী বুঝব?

Article writing এবং Content writing বলতে সাধারণত বোঝায় ৪০০-১০০০ বা তারও বড় আর্টিকেল লেখা। প্রতিনিয়ত ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্রোডাক্টের ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন ব্লগে বহু ধরনের অগণিত লেখার প্রয়োজন হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব সাইটের মালিকেরা নিজেরা লেখার সময় পান না বা সেসব বিষয়ে লেখা তাদের নিজেদের পক্ষে সম্ভব হয় না।

বিষয়বস্ত্ত কী হবে?

যেকোনো কিছু। ইন্টারনেটে বিভিন্ন সাইটে যা পড়া যায়, তেমন যেকোনো কিছু। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিষয়বস্ত্ত হতে পারে কোনো পণ্যনির্ভর। স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, এন্টারটেইনমেন্ট, নিউজ ইত্যাদি যেকোনো কিছু।

পেমেন্ট কেমন?

এসব ৪০০-৬০০ শব্দের একটি লেখা ৫০ সেন্ট থেকে শুরু করে সাধারণত ১.৫ থেকে ৫ ডলার রেটে করা যায়। এরকম একটি লেখার গড় পেমেন্ট হতে পারে ৩ ডলার। তবে আপনি যদি অল্প সময়ে ইজিনআর্টিকেলস-এর সাইটের লেখার চেয়েও ভালো মানের লেখা লিখতে পারেন, তবে ৫০০ শব্দের লেখার জন্য নির্দ্বিধায় ৫-১০ ডলার পর্যন্ত পাবেন।

এছাড়া আপনার ইংরেজি যদি ভালো ওয়েবসাইটের লেখার মতো হয়, অর্থাৎ ধরুন আপনি যদি কোনো সাইটের প্রোডাক্টের জন্য এক পৃষ্ঠার চটকদার সেলস কপি লিখতে পারেন যা দেখে পরে একজন ভিজিটর সেই প্রোডাক্ট কিনতে চাইবে, তাহলে ১০০০ শব্দের জন্য ১৫-২০ ডলারও পেতে পারেন বা ঘণ্টায় ১৫-২০ ডলার হিসেবে কাজ করতে পারবেন।

এবার দু’টি এডভার্ট দেখুন :

100 Articles Writen: Must Have Knowledge About Seo Fixed-Price - Est. Budget: $500.00

I need a writer who does have knowledge about SEO. Preferably from Philippines. I need someone who can work from 8am-12mn. Payment for per article is 350 words $5. 500 words $10.

I need writer who do well.

50 Articles Needed Fixed-Price - Est. Budget: $150.00

I need 50 Articles they must be:

1. Original Content (no spinner articles or duplicate content, we will check)

2. SEO Friendly, keyword rich

3. 450-500 words each

4. Topics will be home decor categories or products

নিজেকে গড়ে নিতে হলে কী করতে হবে?

প্রথমত : আপনাকে মার্কেট স্টাডি করে বুঝতে হবে কেমন লেখার চাহিদা বেশি এবং আপনি কোন ক্ষেত্রে ভালো করতে পারবেন। এরপর বেশ কিছু নমুনা ভালোমতো দেখতে হবে। যেমন- ইজিনআর্টিকেলসডটকম সাইটে ঢুকে দেখা যেতে পারে। বিখ্যাত ব্লগ সাইট, গুগল নিউজ ইত্যাদি দেখে লেখার স্টাইল প্রস্ত্তত করতে হবে।

এরপর নিজে নিজে কয়েকটি নমুনা আর্টিকেল লিখে প্রস্ত্তত হতে হবে। ইজিনআটিকেলসডটকম সাইটে কয়েকটি নমুনা হিসেবে প্রকাশ করা যেতে পারে। সেই সাথে ওডেস্ক বা অন্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটে ব্লগ লেখার পরীক্ষা, নন-ফিকশন লেখার পরীক্ষা ইত্যাদি পরীক্ষায় ভালো করতে হবে।

এবার আপনি প্রস্ত্তত ভালো ইংরেজি লিখে ঘণ্টায় ৫-২০ ডলার আয়ের জন্য।

ষষ্ঠ কিস্তি : প্রুফরিডিং এবং এডিটিংয়ের চাহিদা বুঝতে চেষ্টা করা :

আপনি কি দ্বিতীয় পর্বের পরামর্শমতো দু’টি সাইটে অ্যাকাউন্ট ওপেন করে কাজগুলো বোঝার চেষ্টা করছেন? ভালো করে প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব পড়ে নিন।

প্রুফরিডিং ও এডিটিং আসলে কী?

প্রুফরিডিংয়ের মধ্যে পড়ে সাধারণত নিচের উল্লিখিত কাজগুলো :

01. spelling check
02. typos/typographical errors check
03. all types of punctuation mark check (use of capital letter, comma, period, semi colon, hyphen, slash, dash, apostrophe, quotation mark etc.
04. annotation
05. footnote and endnote
06. bibliographical information presentation
07. APA, MLA, Chicago style proofreading

আর Editing হচ্ছে এরচেয়েও বেশি কিছু। লেখাটিকে পরিমার্জিত করতে হবে, আরো গোছানো হতে হবে এবং সর্বোপরি যে ধরনের পাঠকের বা পত্রিকা বা প্রকাশনার জন্য তৈরি হচ্ছে সেটি মাথায় রেখে ততটুকু ফর্মালি বা ইনফর্মালি উপস্থাপন করতে হবে। থিসিস হলে সেই মানে পরিমার্জন করতে হবে।

এই দু’ধরনের কাজের রেট অন্যান্য ধরনের লেখালেখির কাজের তুলনায় বেশি হতে পারে। ঘণ্টায় ৬ বা ৮ থেকে ২০ ডলার হয়ে থাকে।

কেমন প্রস্ত্ততি নিতে হবে?

APA Style, MLA, Chicago style proofreading জানাটা জরুরি। APA হলো American Psychological Association এবং MLA হলো Modern Languages Association. এছাড়া ব্রিটিশ ইংরেজির জন্য অক্সফোর্ড স্টাইলের Proof reading ও Editing জানলেও ভালো কাজ দেবে।

এসব প্রুফরিডিং বিষয়ে অনলাইন থেকে অনেক সাহায্য পাবেন। নীলক্ষেতেও বই পাবেন আশা করি। তবে নিয়মগুলো বেশ ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে। ওডেস্কে এগুলোর পরীক্ষা আছে। পরীক্ষাগুলোয় প্রথম ১০ শতাংশ বা ২০ শতাংশের মধ্যে থাকলে এ ধরনের কাজ পাওয়াটা সহজ হয়ে যায়।

এছাড়া আপনি নমুনা হিসেবে একটি দুর্বল লেখা জোগাড় করে তার প্রুফরিডিং এবং এডিটিং করে রাখুন। প্রয়োজনে এমপ্লয়ারকে দেখাতে পারবেন। এছাড়াও ইজিনআর্টিকেলসডটকমে কয়েকটি আর্টিকেল প্রকাশ করে রাখুন নমুনা হিসেবে দেখানোর জন্য।

সাফল্য আপনার হাতের মুঠোয় আসবে, যদি সঠিক প্রস্ত্ততি নেয়ার পর কাজের জন্য বিড করা শুরু করেন এবং ডেডলাইন মেনে কাজে ফাঁকি না দিয়ে এগোতে থাকেন। তাহলে এমপ্লয়ারেরা আপনাকে ছাড়তে চাইবে না।

এ পর্যন্ত আমরা ইংরেজিতে লেখালেখি সংক্রান্ত যে কয়টি বিষয়ের ফ্রিল্যান্সিংয়ের গাইডলাইন, নমুনা ও বিজ্ঞপ্তি দেখেছি সেগুলো হলো : rewriting articles, snippet or short article writing, articles writing or content development, proof reading and editing.

ঘরে বসে আয়ের আরো কিছু পথ রয়েছে যেগুলো হলো translation, transcription, summarization, resume writing, PR writing, PowerPoint presentation, and online teaching বিষয়।

ট্রানস্লেশন :
ইংরেজি-বাংলা বা বাংলা-ইংরেজির অনুবাদের কাজ ফ্রিল্যান্সিং সাইটে কম থাকে। বরং প্রফেশনাল সাইট যেমন- ট্রানস্লেটরসবেজডটকম, প্রজডটকম ইত্যাদি সাইটে থাকে এবং এসব সাইটে প্রথমেই পে করে মেম্বারশিপ নিতে হয়। তাই সমস্যা। ব্যক্তিগতভাবে অনুবাদের কাজে আগ্রহ থাকলেও এ সমস্যার জন্য কাজ করা সমস্যা হয়।

ট্রান্সক্রিপশন :
এটি খুবই ভালো আয়ের সুযোগ করে দিতে পারে যদি আপনি দক্ষ হতে পারেন। আপনাকে করতে হবে : একটি অডিও ফাইল কানে শুনবেন বা একটি ভিডিও দেখবেন এবং সেখানে উচ্চারিত ইংরেজি হুবহু টাইপ করে দেবেন।

অর্থাৎ আপনার প্রয়োজন মূল দু’টি দক্ষতা : ০১. ইংরেজি শুনে বোঝা এবং ০২. দ্রুত টাইপিং দক্ষতা।

এতে রেট কেমন হয়? সাধারণত এক ঘণ্টার অডিও বা ভিডিওর জন্য ১০-১৫ ডলার। আপনি যদি শুধু এই কাজের জন্য উপযুক্ত হয়ে ওঠেন, তাহলে বেশ কাজের সুযোগ আছে।

সামারাইজেশন :
সামারাইজেশন কাজটি হচ্ছে একটি আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্টকে ১০০-১৫০ শব্দে রূপ দেয়া। কখনো কোনো বইয়ের সংক্ষিপ্ত রূপও চাইতে পারে।

রিজিউম রাইটিং :
আমেরিকান কর্পোরেট জগত বা ইন্টারনেট জগতের জন্য উপযুক্ত রিজিউমে বা সিভি তৈরি করতে পারলে এ ধরনের কাজও যথেষ্ট পাওয়া যাবে।

প্রেস রিলিজ রাইটিং :
বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা ওয়েবসাইটের জন্য প্রেস রিলিজ লেখার কাজ প্রায়দিনই পাওয়া যাবে। এজন্য আপনাকে প্রেস রিলিজ লেখার সঠিক ফরমেট ও স্টাইল জানতে হবে। এজন্য হয়তো পিআরওয়েবডটকম সাহায্য করতে পারে। আপনাকে প্রমাণ করতে হবে আপনি সঠিক স্টাইলে পিআর তৈরি করতে পারেন।

প্রেস রিলিজের পেমেন্ট আর্টিকেল রাইটিংয়ের চেয়ে বেশি হয়। একটির জন্য ৫-১০ ডলার হয়ে থাকে। কাজও প্রায়ই থাকে।

পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন : এটি আসলে ইংরেজি ও পাওয়ার পয়েন্ট দক্ষতার সমন্বয়। আপনাকে কোনো বইয়ের চ্যাপ্টার বা মিটিংয়ের বিষয়বস্ত্ত বা টিউটোরিয়াল সম্বন্ধে প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে হবে। পেমেন্ট ভালো। মাঝে মাঝেই কাজ থাকে।

অনলাইন টিচিং :
স্কাইপের ভিডিওর মাধ্যমে ইংরেজি শেখানোর সুযোগ আছে। সাধারণত এই কাজ হয় একজনকে শেখানো। ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার ক্লাস।

কয়েকটি সামগ্রিক টিপস দেখা যেতে পারে :

প্রথম টিপস :
ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য অবশ্যই দরকার হবে :

০১. পরিশ্রম,
০২. সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা,
০৩. লেগে থাকার ধৈর্য এবং
০৪. আপনার স্বকীয়তা।

একটি কথা মনে রাখা চাই, ফিলিপিনো আর ভারতীয়রা আমাদের চেয়েও কম পারিশ্রমিকে এমপ্লয়ারকে সব সময় সন্তুষ্ট করতে সচেষ্ট। তবে সঠিক দক্ষতা ও পেশাদারি মনোভাবের সমন্বয় ঘটালে কম পারিশ্রমিকের কাজ এড়াতে পারবেন।

দ্বিতীয় টিপস :
যদি ফ্রিল্যান্সার প্রোফাইলে আপনার কাজের জন্য ঘণ্টাপ্রতি খুবই কম রেট দেখান, তবে তা যেমন একটি সুবিধা দিতে পারে, তারচেয়ে বেশি অসুবিধা করতে পারে।

কম রেট দেখে অনেক এমপ্লয়ার হয়তো আপনাকে কাজ দিতে পারে, কিন্তু এর ফলে আপনি বেশি রেটের কাজে অ্যাপ্লাই করলে কাজ সহজে পাবেন না। তাই প্রথমেই ঠিক করতে হবে আপনি কোন মানের কাজ করতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী রেট ঠিক করতে হবে। রিরাইটিংয়ের জন্য ঘণ্টায় ৪-৬ ডলার দেখানো যেতে পারে। কিন্তু প্রুফরিডিংয়ের জন্য এর বেশি হতে হবে অবশ্যই। আমি এ বিষয়ে একেবারে এক্সপার্ট নই। আপনি সাইটগুলোর ফোরামে ঢুকে দেখে এ বিষয়ে কেমন মন্তব্য আছে জেনে নিন।

তৃতীয় টিপস :
যে সাইটেই পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ আছে, সেখানে পরীক্ষাগুলো দিয়ে ভালো ফল করলে কাজ পাওয়ার সুযোগ বাড়ে। আপনার আইইএলটিএস স্কোর ভালো থাকলে উল্লেখ করবেন অবশ্যই।

চতুর্থ টিপস :
ফ্রিল্যান্সিং সাইটে ঢুকে কাজ শুরুর আগে কিছুদিন অবশ্যই অন্যান্য ফ্রিলান্সারের প্রোফাইল দেখে কিছু অভিজ্ঞতা নিতে হবে। এটি আমার মনে হয় অনৈতিক হবে না। যারা তাদের প্রোফাইল দেখাতে চান না, তারা গোপন করে রাখবেন।

পঞ্চম টিপস :
ফ্রিল্যান্সিং সাইটের ব্লগ বা ফ্রিল্যান্সার ফোরামে ঢুকে লেখা পড়ুন। আলোচনা পড়ুন। অনেক দিকনির্দেশনা পাবেন।

ষষ্ঠ টিপস :
হুট করে কোনো কাজে বিড করবেন না। কাজটি সঠিক সময়ে করে দিতে পারবেন কি না, সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমপ্লয়ারের ইতিহাসও দেখবেন যে তার ফিডব্যাক ভালো কি না।

সপ্তম টিপস :
কয়েকজন ফ্রিলান্সারের পাবলিক প্রোফাইল দেখতে পারেন। কয়েকটি লিঙ্ক দেয়া হলো যেগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে এবং ওসব সাইটের মেম্বার না হলেও দেখা যায়। এটি নৈতিকতার সীমার মাঝে বলে মনে করছি :

ইংরেজি ও ডাটা এন্ট্রিতে পারদর্শী বাংলাদেশী (যথাসম্ভব বছরে ১০ হাজার ডলার আয় করেন) : http://www.odesk.com/users/~~84f8acb246b6e3cb

মিসরীয় ফ্রিল্যান্সার ইংরেজিতে এমএ ডিগ্রিধারী ঘণ্টায় ২৫ ডলার রেটে কাজ করেন :
http://www.odesk.com/users/~~1ad9a9c5e7e2a12f

বাংলাদেশী যিনি অন্তত ১৬০টি লেখালেখির প্রজেক্ট করেছেন ও করিয়েছেন :
http://www.freelancer.com/users/645693.html

ঘণ্টাপ্রতি প্রায় ২ ডলার রেটে ২০০০-এর বেশি ঘণ্টা কাজ করা বাংলাদেশী :
http://www.odesk.com/users/~~d962be5047773601

বাংলাদেশী যিনি অন্তত ২৬০টি লেখালেখির প্রজেক্ট করেছেন :
http://www.freelancer.com/users/756615.html

পাকিস্তানি আর্টিকেল রাইটার (ঘণ্টাপ্রতি ৫-৬ ডলার রেটে কাজ করেন) :
http://www.odesk.com/users/~~f8f9db4c7ef80498

অষ্টম টিপস (খুব গুরুত্বপূর্ণ) : কিভাবে ওডেস্ক বা ফ্রিল্যান্সার থেকে ডলার দেশে আনবেন তার জন্য সবচেয়ে ভালো দিকনির্দেশনা দেয়া আছে মো: জাকারিয়া চৌধুরীর সাইটে। এছাড়া আপনি ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে সাফল্য ও অন্যান্য উপায় জানার জন্য আরো দেখতে পারেন চমৎকার এই বাংলা সাইটটি : http://www.freelancerstory.blogspot.com

এই দু’টি সাইটের বাইরে জিন্নাত উল হাসানের বাংলা ব্লগে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে আরো কিছু তথ্য পেতে পারেন : www.bn.jinnatulhasan.com

লেখার সূত্র : http://www.somewhereinblog.net/blog/selfhelp/29328922


কজ ওয়েব
Source: Monthly Computer Jagat

Monday, January 2, 2012

ইন্টারনেটে আয় সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা

ইন্টারনেটে আয় সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা

ইন্টারনেট ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন বর্তমানে অত্যন্ত আলোচিত বিষয়। বিভিন্ন সূত্র থেকে যারা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন তারা প্রায়ই কিছু ভুল ধারণার শিকার হন। এ কাজে হাত দেয়ার আগে ভুল ধারণাগুলো সম্পর্কে জেনে নিন।
এটা সবচেয়ে বড় ভুল ধারণা যে, সহজে এবং বিনা পরিশ্রমে ইন্টারনেটে আয় করা যায়। আপনি আশা করছেন একজন চাকরিজীবী কিংবা ব্যবসায়ীর থেকে বেশি আয় করবেন অথচ পরিশ্রম করবেন না, এটা বাস্তবসম্মত হতে পারে না। ইন্টারনেটে যে প্রতিতেই আয় করুন না কেন, আপনাকে যথেষ্ট সময় এবং মেধা ব্যয় করতে হবে।
আরেকটা বড় ভুল ধারণা, ইন্টারনেটে আয় করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। ইন্টারনেটে কাজ বলতে যেমন দক্ষ প্রোগ্রামিং বোঝায় তেমনি তুলনামূলক সহজ গ্রাফিক্স ডিজাইন বোঝায়, কিংবা আরও সহজ ডাটা এন্ট্রি বোঝায়। যে কোনো শিক্ষিত মানুষের পক্ষে মানানসই কাজ খুঁজে নেয়া সম্ভব। তবে একথা অবশ্যই ঠিক, দক্ষতা যত বেশি, আয়ের সুযোগ তত বেশি। দক্ষতা যেহেতু বাড়ানো যায়, সেহেতু সুযোগও বাড়ানো যায়।
পেইড-টু-ক্লি (PTC) : পিটিসি হচ্ছে কোনো ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট লিঙ্কে ক্লিক করা যাতে আপনার নামে টাকা জমা হবে। বিষয়টি সত্যি। তবে যতটা প্রচার করা হয় ততটা নয়। আপনি কতগুলো ক্লিক করার সুযোগ পাবেন সেটা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। কাজ করে টাকা না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
ষ ইন্টারনেটে আয় করতে নিজের খরচে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয় শুধু তাই নয়। বরং একেবারে বিনামূল্যেও ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। কাজেই ওয়েবসাইট তৈরি, ডোমেন কিংবা হোস্টিংয়ের খরচ ছাড়াই সব কাজ করা সম্ভব। তবে নিজস্ব ডোমেইন-হোস্টিং সবসময়ই ভালো।
ক্রেডিট কার্ড বা পে-পল অ্যাকাউন্ট নেই, ফলে এ কাজ সম্ভব নয় একথাও কিছুটা সত্যি। ক্রেডিট কার্ড থাকলে কাজের সুবিধা হয়, পে-পল অ্যাকাউন্ট থাকলেও সুবিধা হয়। তারপরও মানুষ কাজ করছে এগুলো ছাড়াই।
এডসেন্সে লাভ দেখে অনেকেই একাধিক এডসেন্স অ্যাকাউন্ট ব্যবহারে আগ্রহী হন। এটা ভুল পথ। গুগল যে কোনো এক সময় সেটা ধরে ফেলবে এবং সবগুলো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেবে। সুতরাং এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের জন্য সফটওয়্যার ব্যবহার করলে অবশ্যই সাইটের পরিচিতি বাড়ে, কিন্তু এডসেন্সকে টার্গেট করে যদি সেটা করেন তাহলে গুগল সেটা পছন্দ করে না। গুগল এমন সাইটে লাভজনক এডসেন্স বিজ্ঞাপন দেয় সেখানে ভিজিটর নিজে আগ্রহী হয়ে যায়। ফলে কোনো সাইটে প্রতি ক্লিকে পাওয়া যায় কয়েক সেন্ট, কোনো সাইটে কয়েক ডলার।
ইন্টারনেটে আয়ের জন্য কোনো খরচ নেই সত্য তবে বিনামূল্যের সবসময়ই কিছু খারাপ দিক থাকে। ভালো হোস্টিং, প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার, প্রচারের জন্য এডওয়ার্ডস বিজ্ঞাপন সবকিছুই ভালো আয়ের জন্য সহায়ক।
অনেক সেবার ক্ষেত্রেই অনেক দেশে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বাংলাদেশে যেমন পে-পল ব্যবহার করা যায় না, ক্লিক ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা যায় না, কোনো কোনো সাইটে ঢোকা যায় না ইত্যাদি। কোন সেবা কোন দেশে প্রযোজ্য আগে জেনে নেয়াই ভালো।
আপনি যখন আয় করতে চান ইন্টারনেট ব্যবহার করে, তখন শেখার জন্যও ইন্টারনেট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। যে বিষয়ই জানতে চান না কেন, ইন্টারনেট সার্চ করলে তথ্য পাওয়া যাবে। বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সদস্য হোন, ফোরামে যোগ দিন, সেখানকার বক্তব্যগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। অনলাইনে আয়ের বিভিন্ন টিউটোরিয়াল প্রকাশিত হচ্ছে, সেগুলো পড়ুন। প্রয়োজনে বিভিন্ন ফোরামে আপনার সমস্যাগুলো বা প্রশ্নগুলো জানান। কেউ না কেউ উত্তর দেবেন নিশ্চয়।

Source: Daily Amardesh

অনলাইনে অর্থ উপার্জন

অনলাইনে অর্থ উপার্জন

- আহসান হাবিব

ইচ্ছে করলে বাংলাদেশে থেকে ঘরে বসেই টাকা উপার্জন সম্ভব। আপনিও সেটা করতে পারেন। বলা হয়ে থাকে, সারা বিশ্বের বড় বড় কোম্পানি প্রতি বছর তাদের প্রচারের জন্য ২৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে। সেই অর্থের কিছু অংশ এভাবে আপনার হাতে আসতেই পারে। এভাবে যে পরিমাণ টাকা উপার্জন করা সম্ভব তা বাংলাদেশের হিসেবে অস্বাভাবিক রকমের বেশি মনে হতে পারে। এক আমেরিকান ভদ্রলোক মাসে ১ লাখ ডলার আয়ের হিসেব দিয়েছেন। তবে এজন্য প্রথমে আপনাকে জানতে হবে কাজটি কতটা সহজ, কী করতে হবে এবং কীভাবে করতে হবে?

বিজ্ঞাপন ব্যবহার করলে ইনকাম

অনলাইনে আয়ের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি যা আলোচিত হচ্ছে তা হচ্ছে গুগলের অফংবহংব এবং অফড়িত্ফং বিজ্ঞাপন। অর্থাত্ আপনার ওয়েব সাইটে বিজ্ঞাপনের লিঙ্ক থাকবে, সেখানে ক্লিক করলে আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হবে। আপনি নিশ্চয়ই জানেন, গুগল বিশ্বের সেরা দশ ব্রান্ডের এক কোম্পানি। ইন্টারনেটের বিজ্ঞাপন বাজারের অধিকাংশ তার একার দখলে। তারা যা করে তা হচ্ছে অন্যদের ওয়েব সাইট ব্যবহার করে। অর্থাত্ তারা কোনো কোম্পানির কাছ থেকে টাকা নেবে তাদের প্রচারের জন্য। তাদের বিজ্ঞাপন দেয়া হবে আপনার ওয়েব সাইটে। কেউ সেই বিজ্ঞাপন ব্যবহার করলে আপনিও টাকা পাবেন। অর্থাত্ আপনার হাতে টাকা আসার কয়েকটি শর্ত রয়েছে। প্রথমত, ওয়েব সাইট থাকতে হবে। সেখানে প্রচুর পরিমাণ ভিজিটর আসতে হবে। তাদের বিজ্ঞাপনের লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে (অকারণে ক্লিক করা যাবে না, কারণ সেটা যাচাইয়েরও ব্যবস্থা আছে)। এই শর্তগুলো ঠিক থাকলে ঘরে টাকা আসতে শুরু করবে। অর্থাত্ যত বেশি ক্লিক তত বেশি টাকা।

একটি বিষয় তৈরি করুন

প্রথমে ওয়েবসাইট এবং ভিজিটরের বিষয়টি দেখা যাক। জানা মতে, সারা বিশ্বে ব্লগ রয়েছে প্রায় ১২শ’ কোটি যা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ। প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে এই সংখ্যা দ্রুতহারে বাড়ছে। এই ভিড়ের মধ্যে আপনার ওয়েবসাইটে অন্যদের টেনে আনার জন্য ওয়েবসাইটে এমন কিছু থাকতে হবে যার আকর্ষণে প্রচুর পরিমাণ ভিজিটর সাইট ভিজিট করবেন। অর্থাত্ সাইটে গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণের জন্য উপকারী তথ্য থাকতে হবে। একটা কথা জানিয়ে রাখা ভালো, পর্নোগ্রাফি জাতীয় বিষয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখায় মানুষ, তবে এ ধরনের সাইটে এ ধরনের বিজ্ঞাপন দেয়া যায় না। কাজেই আপনার প্রথম কাজ হবে, ভালো একটি বিষয় ঠিক করে ভালো মানের ওয়েবসাইট তৈরি করা। এই ধাপ অতিক্রম না করে পরবর্তী ধাপে না যাওয়াই ভালো। অকারণে কিন্তু আপনার সাইটে হাজার হাজার ভিজিটর আসবে না।

টার্গেট ভিজিটর ঠিক করে নিন

কাদের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করবেন অর্থাত্ আপনার টার্গেট গ্রুপ কারা সেটা আগেই ঠিক করে নিন। ব্রিটেনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে শতকরা ৬০ ভাগ মানুষ, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৯০ ভাগ, আর বাংলাদেশে কম্পিউটার ব্যবহার করা মানুষের সংখ্যা শতকরা ১ ভাগের নিচে। বলা যায়, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা নগণ্য। বাংলাভাষীদের জন্য ওয়েবসাইট করলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার ভিজিটর কম হবে। যদি আগে উল্লেখ করা ভদ্রলোকের মতো লাখো ডলার আয় করতে চান তাহলে সারা বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে যেতে হবে এবং এমন বিষয় থাকতে হবে যেখানে তারা আগ্রহ দেখাবেন। কোন সাইটগুলো মানুষ বেশি ব্যবহার করে, সেগুলোর বৈশিষ্ট্য কী, ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিন। ওয়েবসাইটের সঙ্গে মিল রেখে যেহেতু বিজ্ঞাপন দেয়া হয় এবং সে অনুযায়ী পেমেন্ট দেয়া হয়, সেহেতু ওয়েবসাইটের বিষয়টিও মাথায় রাখুন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ক্রিকেটের জন্য ওয়েবসাইটে প্রতি ক্লিকে হয়তো কয়েক সেন্ট পাওয়া যাবে, যেখানে অর্থনীতি বিষয়ে সাইটে পাওয়া যাবে কয়েক ডলার।

চাই মানসম্মত ওয়েবসাইট

আপনি যদি ঘরে বসে বেশি আয় করতে চান তাহলে সেই মানের ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে হবে। এই কাজকে সহজে বলতেই পারেন কারণ একজন কৃষকের মতো সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হবে না। আপনার যদি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে এ ধরনের বিজ্ঞাপন ছাড়াও আরও অনেক ধরনের আয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন : কোনো কোম্পানির বিজ্ঞাপন সরাসরি আপনার সাইটে রাখতে পারেন টাকার বিনিময়ে। নিউইয়র্ক টাইমসের মতো পত্রিকাও অনলাইন বিজ্ঞাপনের কাছে হার মেনে বন্ধ হওয়ার মুখে। আপনি উদ্যোগ নিয়ে এদেশে আগে থেকেই নিজের অবস্থান ঠিক করে নিতে পারেন।

আয়ের অনেক সুযোগ আছে

বিজ্ঞাপনের বাইরেও ইন্টারনেট ব্যবহার করে বহুরকম আয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। আপনি কোনো পণ্যের রিভিউ লিখতে পারেন। দৈনিক একটি করে রিভিউ লিখে মাসে কয়েক হাজার ডলার আয় করা সম্ভব। আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন—কম্পিউটার, ক্যামেরা অথবা গেম, সফটওয়্যার, মুভি ইত্যাদি বাজারে আসার আগেই অনলাইন রিভিউ দেখা যায়। যারা রিভিউ লেখেন তাদের টাকা দিয়ে এ কাজ করানো হয়। আপনি যে বিষয়ে রিভিউ লিখতে আগ্রহী সেই বিষয়ে অবশ্যই পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে এবং অবশ্যই ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। সরাসরি আপনার পক্ষে হয়তো কোনো কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব নয়। সে কারণে বহু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা এ কাজে সহায়তা করে। তারা রিভিউ, ডাটা এন্ট্রি, সার্ভে ইত্যাদি কাজ সংগ্রহ করে দিতে পারে। এজন্য তাদের কিছু ফি দিতে হয়। ইন্টারনেটে সার্চ করলেই এদের ঠিকানা পাবেন। তবে তারা সত্যিকারের সার্ভিস দেবে নাকি ফি হিসেবে দেয়া আপনার টাকা মেরে দেবে, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। ইন্টারনেটে ঠগবাজের কিন্তু অভাব নেই।

ধৈর্য ধরতে হবে

যে কোনো কাজেই সফলতা চাইলে ধৈর্য ধরতে হবে। আপনি হয়তো প্রথম দিকে তেমন কাজ নাও পেতে পারেন। আবার কাজ পেলেও ইনকাম হয়তো তেমন হবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে ধৈর্যের সঙ্গে এগোতে হবে। পাশাপাশি নিজের যোগ্যতা অর্জনের জন্যও আপনাকে অভিজ্ঞ করে তুলতে কিছু সময় তো ব্যয় করতেই হবে। আবারও সেই আমেরিকান ভদ্রলোকের কথা মনে করিয়ে দেই। তিনি লাভের মুখ দেখেছিলেন আড়াই বছর পর। তাই, আপনি কাজে হাত দিয়ে রাতারাতি লাভের আশা করবেন না।

ইন্টারনেটেই সব পাবেন

ঘরে বসে ইন্টারনেটে টাকা আয় করবেন এজন্য অন্যকে টাকা দিয়ে সিডি কেনা, সেমিনারে যোগ দেয়া কিংবা ট্রেনিং করার প্রয়োজন নেই। তাদের কাছে সেটাই টাকা উপার্জনের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। ইন্টারনেট সার্চ করুন, দুনিয়ায় এমন কোনো তথ্য নেই যা পাবেন না। তবে তার আগে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য কিছু প্রশিক্ষণ তো নিতেই হবে। আজকাল অনেকে ঘরে বসে টাকা আয়ের নানা কোর্স করানোর নামে প্রতারণাও করছে। এসব বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন জরুরি। মোটকথা, বাইরের জগত অনেক বড় এবং আমরা সহজেই তাতে অংশ নিতে পারি। নিজেরা লাভবান হতে পারি।
Source: Daily Amardesh