Friday, February 4, 2011

ঘরে বসে বিপুল ‍আয়ের ‍উপায়

ঘরে বসে বিপুল ‍আয়ের ‍উপায়
Source: Computer Jagat
মো: জাকারিয়া চৌধুরী

অনলাইন ফ্রিল্যান্সি আউটসোর্সিং - ঘরে বসে বিদেশে কাজ প্রয়োজন শুধু কমপিউটার, ইন্টারনেট, মেধা ‍আর কাজের ‍আগ্রহ।



বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ভুবনে তরুণদের কাছে বহুল আলোচিত বিষয়ের একটি হচ্ছে অনলাইন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং৷ যদিও আমাদের দেশে এখনো এ বিষয়টি নতুন, কিন্তু এরই মধ্যে অনেকে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যকে পুরোপুরি বদলে দিতে সক্ষম হয়েছেন৷ পড়ালেখা শেষে বা পড়ালেখার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং করে যেকেউ গড়ে নিতে পারেন নিজের ভবিষ্যত্ ক্যারিয়ার৷ ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং হচ্ছে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের এক বিশাল বাজার৷ উন্নত দেশগুলো উত্পাদন খরচ কমানোর জন্য আউটসোর্সিং করে থাকে৷ আমাদের পাশের দেশ ভারত এবং পাকিস্তান সেই সুযোগটিকে খুবই ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে৷ আমরাও যদি ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের বিশাল বাজারের সামান্য অংশ ধরতে পারি, তাহলে এটি হতে পারে আমাদের অর্থনীতি মজবুত করার একটি কার্যকর উপায়৷
গতানুগতিক চাকুরীর বাইরে নিজের ইচ্ছামত কাজ করার স্বাধীনতা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। ইন্টারনেটের কল্যানে এখন আপনি খুব সহজেই একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন। এখানে একদিকে যেরকম রয়েছে যখন ইচ্ছা তখন কাজ করার স্বাধীনতা, তেমনি রয়েছে কাজের ধরন বাছাই করার স্বাধীনতা। আয়ের দিক থেকেও অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এ রয়েছে অভাবনীয় সম্ভাবনা। এখানে প্রতি মূহুর্তে নতুন নতুন কাজ আসছে। প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েবসাইট, গেম, 3D এনিমেশন, প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, সফ্টওয়্যার বাগ টেস্টিং, ডাটা এন্ট্রি - এর যেকোন এক বা একাধিক ক্ষেত্রে আপনি সফলভাবে নিজেকে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তৈরি করে নিতে পারেন। তবে প্রথমদিকে আপনাকে একটু ধ্যর্য এবং কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। এই প্রতিবেদনটি তাই এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে আপনি একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে সফলভাবে প্রকাশ করতে পারেন।


ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট
ইন্টারনেটে অনেকগুলো জনপ্রিয় ওয়েবসাইট রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিং সার্ভিস দেয়। এগুলো থেকে যেকোন একটিতে রেজিস্ট্রিশনের মাধ্যমে আপনি শুরু করতে পারেন। এসব ওয়েবসাইটে যারা কাজ জমা দেয় তাদেরকে বলা হয় Buyer বা Client এবং যারা এক কাজগুলো সম্পন্ন করে তাদেরকে বলা হয় Provider বা Coder. একটি কাজের জন্য অসংখ্য কোডাররা Bid বা আবেদন করে এবং ওই কাজটি কত টাকায় সম্পন্ন করতে পারবে তাও উল্লেখ করে। এদের মধ্য থেকে ক্লায়েন্ট যাকে ইচ্ছা তাকে নির্বাচন করতে পারে। সাধারণত পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা, টাকার পরিমাণ এবং বিড করার সময় কোডারের মন্তব্য কোডার নির্ববচন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কোডার নির্বাচন করার পর ক্লায়েন্ট কাজের সম্পূর্ণ টাকা ওই সাইটগুলোতে জমা করে দেয়। এর মাধ্যমে কাজ শেষ হবার পর সাথে সাথে টাকা পাবার নিশ্চয়তা থাকে। পুরো সার্ভিসের জন্য কোডারকে কাজের একটা নির্দিষ্ট অংশ ওই সাইটকে ফি হিসেবে দিতে হয়। এই পরিমাণ ওয়েবসাইট এবং কাজের ধরনভেদে ভিন্ন ভিন্ন (১০% থেকে ১৫%)। এই সাইটগুলোকে কয়েকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট হচ্ছে:
www.RentACoder.com, www.GetAFreelancer.com, www.GetACoder.com, www.Scriptlance .com, www.Joomlancers .com , www.oDesk.com ইত্যাদি।

নিচে কয়েকটি সাইট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল:
www.RentACoder.com
রেন্ট-এ-কোডার এ প্রায় দুই লক্ষ কোডার রেজিস্ট্রেশন করেছে। এই সাইটে প্রতিদিনই প্রায় ২৫০০ এর উপর কাজ পাওয়া যায়। সাইটের সার্ভিস চার্জ বা কমিশন হচ্ছে প্রতিটি কাজের মোট টাকার ১৫% যা কাজ সম্পন্ন হবার পর কোডারকে পরিশোধ করতে হয়। এই প্রতিবেদনটি মূলত রেন্ট-এ-কোডার সাইটকে ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। তবে মূল ধারনা প্রতিটি সাইটের ক্ষেত্রেই প্রায় একই।
www.GetAFreelancer.com
এই সাইটে মোট কোডার বা প্রোভাইডারের সংখ্যা হচ্ছে প্রায় সাত লক্ষ। এই সাইটেও প্রায় ২৫০০ এর উপর কাজ প্রতিদিন পাওয়া যায়। সাইটির সার্ভিস চার্জ হচ্ছে প্রতিটি কাজের মোট টাকার ১০%। তবে গোল্ড মেম্বারদের জন্য কোন সার্ভিস চার্জ নেই। গোল্ড মেম্বার হতে প্রতি মাসে আপনাকে মাত্র ১২ ডলার পরিশোধ করতে হবে। নতুন ইউজারদের জন্য এই সাইটে ট্রায়াল প্রোজেক্ট নামে একটি বিশেষ ধরনের কাজ পাওয়া যায় যাতে শুধুমাত্র নতুন কোডারাই বিড করতে পারবে। ফলে প্রথম কাজ পেতে আপনাকে খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না।
www.joomlancers.com
এই সাইটে শুধুমাত্র Joomla এর কাজ পাওয়া যায়। Joomla হচ্ছে একটি ওপেনসোর্স কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। যারা Joomla এ পারদর্শী তারা এই সাইটে বিড করে দেখতে পারেন। এখানে প্রায় ৫৫০০ ফ্রিল্যান্সার রেজিস্ট্রেশন করেছে আর এখানে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ টি কাজ পাওয়া যায়। এই সাইটে কমিশন হিসেবে প্রতিটি কাজের ১০% টাকা কোডারকে পরিশোধ করতে হবে। গোল্ড মেম্বার হতে হলে আপনাকে প্রতি মাসে ৫০ ডলার প্রদান করতে হবে।
www.oDesk.com
এক সাইটের ফিচার উপরে উল্লেখিত সাইট থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে প্রোভাইডারকে প্রতি ঘন্টা কাজের জন্য টাকা প্রদান করা হয়। ক্লায়েন্ট আপনাকে সম্পূর্ণ প্রজোক্টের জন্য বা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য (কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস এর জন্য) নিয়োগ দিতে পারে। রেজিষ্ট্রেশন করার সময় প্রতি ঘন্টায় আপনার কাজের মূল্য উল্লেখ করে দিতে হবে। কাজ শেষে আপনি যত ঘন্টা কাজ করেছেন ঠিক ততটুকু পরিমাণ টাকা ক্লায়েন্ট আপনাকে প্রদান করবে। কাজ করার মূহুর্তে আপনার ব্যয়কৃত সময় নির্ধারণ করার জন্য আপনাকে একটি সফ্টওয়্যার চালু রাখতে হবে। এই সফ্টওয়্যারটি একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর আপনার ডেস্কটপের স্ক্রিসশট এবং অন্যান্য তথ্য ক্লায়েন্টের কাছে পাঠাবে। ফলে ওই সময় আপনি কাজ করছেন কিনা ক্লায়েন্ট সহজেই নির্ধারণ করতে পারবে। তবে অন্য সাইটগুলোর মত এখানেও অনেক কাজ পাওয়া যায় যেখানে সম্পূর্ণ প্রজেক্টের জন্য একটি নির্দিষ্ট টাকা প্রদান করা হয়। এই সাইটে প্রতি কাজের জন্য ১০% টাকা কমিশন হিসেবে প্রদান করতে হয়। যেহেতু বেশিরভাগ কাজ ঘন্টা হিসেবে প্রদান করা হয় তাই অন্য সাইটগুলোর তুলনায় এই সাইট থেকে অনেক বেশি পরিমাণে টাকা আয় করা সম্ভব।
অনলাইনে কাজের ধরন
অনলাইনে প্রায় সকল ধরনের কাজ করা যায়। আপনি যে কাজে পারদর্শী তা দিয়েই ঘরে বসে আয় করতে পারেন। এজন্য আপনাকে যে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকধারী হতে হবে তা কিন্তু নয়। আর আপনি যদি মনে করেন কোন একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে আপনি বিশেষ পারদর্শী নন তাহলে ডাটা এন্ট্রি এর মত কাজগুলো করতে পারেন। ছাত্ররাও ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে পড়ালেখার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের একটা ব্যবস্থা করতে পারেন। ইন্টারনেটে নিম্নলিখিত প্রকারের কাজ পাওয়া যায়: প্রোগ্রামিং , ওয়েবসাইট তৈরি , ডাটাবেইজ, গ্রাফিক্স ডিজাইন, এনিমেশন, গেম তৈরি, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, সফ্টওয়ার টেস্টিং এবং ডাটা এন্ট্রি।
কিভাবে শুরু করবেন
প্রথমে যে কোন একটি ফ্রিল্যান্সিং সাইটে রেজিস্ট্রশন করে নিতে হবে। রেজিস্ট্রশন করা সময় আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, ইমেইল ইত্যাদি সঠিকভাবে দিতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের একটি ধাপে আপনার একটি প্রোফাইল/রেজ্যুমে তৈরি করতে হবে যেখানে আপনি কোন কোন ক্ষেত্রে পারদর্শী তা উল্লেখ করবেন। এখানে আপনি আপনার পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা, ওয়েবসাইট লিংক ইত্যাদি দিতে পারেন। পরবর্তীকালে এই প্রোফাইল কাজ পাবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সফলভাবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবার পর, এখন আপনি বিড করা শুরু করে দিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে প্রতি মূহুর্তে নতুন কাজ আসছে। আপনার পারদর্শীতা আনুযায়ী প্রতিটা কাজ দেখতে থাকুন। প্রথম কয়েক দিন বিড করার কোন প্রয়োজন নেই। এই কয়েকদিন ওয়েবসাইটি ভাল করে দেখে নিন। ওয়েবসাইটের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন এবং সাহায্যকারী আর্টিকেল পড়ে ফেলতে পারেন। একটি কথা মনে রাখবেন, প্রথমদিকে কাজ পাওয়া কিন্তু সহজ নয়। তাই আপনাকে ধর্য্যসহকারে বিড করে যেতে হবে। প্রথম কাজ পেতে হয়ত ১০ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। কয়েকটি কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার পর আপনাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না। তখন ক্লায়েন্টরাই আপনাকে খোজে বের করবে।
কয়েকটি গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়
শুরুতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনাকে জানতে হবে। সেগুলো হল:

Rating :
একটি কাজ সম্পন্ন হবার পর ক্লায়েন্ট আপনার কাজের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে ১ থেকে ১০ এর মধ্যে আপনাকে ভোট দিবে। এখানে সর্বোত্তকৃষ্ট রেটিং হচ্ছে ১০। নতুন কাজ পাবার ক্ষেত্রে এই রেটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন ‌১০ রেটিং পেতে। এজন্য কাজ জমা দেয়ার আগে ভাল করে দেখে নিন আপনি ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী সকল কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করেছেন কিনা এবং নির্ধারিত সময় শেষ হবার পূর্বেই কাজ জমা দিন। গড় রেটিং ৯ এর চেয়ে কম হলে ধীরে ধীরে নতুন কাজ পাবার সম্ভাবনা কমে যাবে।
Ranking :
ফ্রিল্যান্সিং একটি সাইটে সকল কোডার এর মধ্যে আপনার অবস্থান কত তা জানা যায় রেংকিং এর মাধ্যমে। রেন্ট-এ-কোডারে আপনার গড় রেটিং এবং সর্বমোট কত টাকার কাজ সম্পন্ন করেছেন তা দিয়ে আপনার অবস্থান নির্ধারিত হয়। রেটিং এর মত রেংকিং ও নতুন কাজ পাবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যার রেংকিং যত সামনের দিকে তার কাজ পাবার সম্ভাবনা অন্যদের চাইতে বেশি। তবে বিড করার সময় আপনি যদি ক্লায়েন্টকে আপনার মনোবল, আত্মবিশ্বাস আর সম্ভব হলে পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা দেখাতে পারেন তাহলে সবাইকে পেছনে ফেলে আপনিই কাজ পেয়ে যেতে পারেন।
Deadline :
কাজ শুরু করার পূর্বে ক্লায়েন্ট কাজ জমা দেবার একটি ডেডলাইন বা সর্বোচ্চ সময়সীমা উল্লেখ করে দেয়। আপনার যদি মনে হয় যে এই কাজ আপনি ক্লায়েন্ট কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে জমা দিতে পারবেন না তাহলে কাজ শুরু করার পূর্বেই ক্লায়েন্টকে অনুরোধ করুন ডেডলাইন সময় বাড়িয়ে দিতে। ক্লায়েন্ট সম্মত হলে কাজটি শুরু করুন। আর যদি ক্লায়েন্ট সময় বাড়াতে আপত্তি জানায় তাহলে কাজটি গ্রহন না করাই আপনার জন্য ভাল হবে। কারন ডেডলানে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে যদি আপনি কাজটি জমা দিতে না পারেন তাহলে কাজের সম্পূর্ণ টাকাই আপনি হারাতে পারেন। উপরন্তু ক্লায়েন্ট আপনাকে একটি বাজে রেটিং দিয়ে দিতে পারে। তাই কখনও যদি এরকম কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তখন অনতিবিলম্বে আপনার বর্তমান অবস্থা ক্লায়েন্টকে জানান এবং ডেডলাইন সময় বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করুন।
Mediation/Arbitration:
কখনও যদি ক্লায়েন্ট আপনাকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় বা সম্পূর্ণ কাজ জমা দেবার পর আপনাকে বলে যে আপনি ঠিকভাবে সকল কাজ সম্পন্ন করেন নি তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং সাইটের মেডিএশন/আর্বিট্রশনের সাহায্য নিতে পারেন। এই সার্ভিসের মাধ্যমে আপনি ওই সাইটের কাছে আপনার সমস্যা জানাতে পারেন। সাইটের কর্তৃপক্ষ তখন উভয়পক্ষের অভিযোগ শুনবে এবং কাজ চলাকালীন সময় ক্লায়েন্ট এবং আপনার মধ্যে যে ম্যাসেজ আদান-প্রদান হয়েছে তা যাচাই করে দেখবে। সবশেষে আপনার অভিযোগ সত্য হলে আপনি পুরো টাকা পেয়ে যাবেন। তবে যতটা সম্ভব আর্বিট্রেশনে না যাওয়াই উত্তম, কারন অনেকক্ষেত্রে দেখা গেছে কর্তৃপক্ষ ক্লায়েন্টকে সাপোর্ট করে এবং আপনি কোন টাকা পাবেন না। আপনি দোষী প্রমাণিত হলে কর্তৃপক্ষ আপনাকে একটি বাজে রেটিং দিয়ে দিবে। তাই চেষ্টা করবেন আলোচনার মাধ্যমে ক্লায়েন্টের সাথে মিমাংসা করে নিতে। এরকম অনাকাংক্ষিত পরিস্থিতিতে না পড়তে চাইলে কাজ শুরু করার পূর্বে ক্লায়েন্টকে বলুন তাদের চাহিদা পরিষ্কার করে উল্লেখ করতে। ক্লায়েন্টকে সরাসরি ইমেইল না করে সকল ম্যাসেজ আদান-প্রদান ওই সাইটের ম্যাসেজ সিস্টেমের মাধ্যমে করুন।
Escrow :
কাজ শুরু করার পর ক্লায়েন্ট কাজের সম্পূর্ণ টাকা ওই ফ্রিল্যান্সিং সাইটে জমা রাখে। এই জমা রাখাকে বলা হয় এসক্রো যা কাজ সম্পন্ন হবার পর কোডারের টাকা পাবার সম্ভাবনা নিশ্চিত করে। ক্লায়েন্ট টাকা এসক্রোতে জমা রাখা পূর্বে কাজ শুরু করা উচিত নয়।

একটি প্রজেক্ট সম্পন্ন করার ধাপসমূহ

নিচে রেন্ট-এ-কোডার সাইটের আলোকে একটি প্রজেক্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধাপগুলো পর্যায়ক্রমে বর্ণনা করা হল:
১. প্রজেক্ট সার্চ করা
প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন কাজ আসছে। এর মধ্য থেকে আপনি যে বিষয়ে দক্ষ তা খোজে বের করে প্রতিটি কাজ পর্যবেক্ষণ করুন। এতে ওই ধরনের কাজে ক্লায়েন্টদের চাহিদা এবং কাজের মূল্য সম্পর্কে আপনার সুস্পষ্ট ধারনা হবে। নির্দিষ্ট এক বা একাধিক ধরনের কাজ খোজার জন্য আপনি সাইটের প্রজেক্ট ফিল্টার সেটিং-এর সাহায্য নিতে পারেন।
২. বিড করা
একটি কাজ পর্যবেক্ষণ করার পর আপনি যদি মনে করেন কাজটি আপনি সফলতার সাথে সম্পন্ন করতে পাবেন তাহলে ওই কাজের জন্য বিড করুন। বিড করতে আপনাকে সাইটে লগইন করতে হবে। বিড করার জন্য আপনি ওই কাজটি কত ডলারে সম্পন্ন করতে পারবেন তা উল্লেখ করুন এবং কাজটি সম্পর্কে আপনার মতামত জানিয়ে ক্লায়েন্টকে ম্যাসেজ দিন। এখানে লক্ষণীয় হচ্ছে, একটি কাজের জন্য সর্বোচ্চ কত ডলার বিড করতে পারবেন তা প্রজেক্টের বিবরণের সাথে উল্লেখ করে দেয়। তাই তার মধ্যে বিড করুন। তবে আপনি যদি ওই সাইটে এর আগে কোন কাজ না করে থাকেন তাহলে যতটুকু সম্ভব কম মূল্য উল্লেখ করুন। আপনার রেংকিং বাড়ার সাথে সাথে বিডের মূল্য বাড়িয়ে দিন।
৩. কাজ শুরু করা
সকল কোডারের মধ্য থেকে ক্লায়েন্ট যদি আপনাকে নির্বাচিত করে থাকে তাহলে দেরি না করে শুরু করে দিন। ক্লায়েন্ট সাধারণত কাজ শুরুর সাথে সাথে সকল টাকা এসক্রোতে জমা রেখে দেয়। তবে কোন কারনে জমা দিতে দেরি হলে তাকে অনুরোধ করুন। এরপর ক্লায়েন্টের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ফাইল, তাদের সার্ভার ও ডাটাবেইজের তথ্য জেনে নিয়ে কাজ শুরু করে দিন। সম্ভব হলে প্রতিদিন বা একদিন পরপর আপনার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে তাকে অভিহিত করুন। ক্লায়েন্টের কোন চাহিদা না বুঝতে পারলে যত দ্রুত সম্ভব তার সাথে যোগাযোগ করুন। ক্লায়েন্টকে সরাসরি ইমেইল না করে সবসময় চেষ্টা করবেন ওই সাইটের ম্যাসেজ সিস্টেমের সাহায্যে যোগাযোক করুন। এতে পরবর্তিতে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা মোকাবেলা করতে পারবেন।
৪. প্রতি সপ্তাহের স্টেটাস রিপোর্ট
রেন্ট-এ-কোডারে বড় কাজগুলোর জন্য প্রতি শুক্রবারে কাজের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে হয়। এজন্য ওয়েবসাইটে প্রজেক্টের পাতায় গিয়ে "File Weekly Status Report" বাটনে ক্লিক করুন এবং আপনার মন্তব্য দিন। কোন কারনে আপনি যদি স্টেটাস রিপোর্ট না দেন তাহলে আপনার রেংকিং-এর মোট স্কোর থেকে ১০০০ স্কোর বাদ দেয়া হবে। ফলে রেংকিং-এ আপনি অন্যদের থেকে অনেকটা পিছিয়ে পড়বেন।
৫. কাজ জমা দিন
কাজ শেষ হবার পর দেরি না করে সাইটে গিয়ে সমস্ত কাজ zip করে আপলোড করে দিন। খেয়াল রাখবেন যাতে আপনি ডেডলাইনে উল্লেখিত সময়ের পূর্বেই কাজ জমা দিতে পারেন। কাজটি যদি হয় ওয়েবসাইট তৈরি করা তাহলে অনেক সময় ক্লায়েন্টের সার্ভারে সাইটি আপলোড এবং সেটাপ করে দিতে হতে পারে।
৬. ক্লায়েন্ট কাজ গ্রহণ করবে
এরপর ক্লায়েন্টের মন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করুন। কোন পরিবর্তন থাকলে ক্লায়েন্ট আপনাকে জানাবে। আর ক্লায়েন্ট যদি আপনার কাজে সন্তুষ্ট হয় তাহলে সে সাইটে একটি বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে কাজটি গ্রহন করবে যা ইমেলের মাধ্যমে সাথে সাথে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। একই সাথে এসক্রো থেকে টাকার একটি অংশ সাইটে আপনার একাউন্টে জমা হবে। আরেকটি অংশ (১০% বা ১৫%) সাইটটি ফি হিসেবে রেখে দেবে।
৭. রেটিং এবং মন্তব্য করুন
এবার প্রজেক্টের পাতায় গিয়ে ক্লায়েন্টকে ১ থেকে ১০ এর মধ্যে রেটিং করুন এবং একটি মন্তব্য দিন। ক্লায়েন্টের ব্যবহারে আপনি সন্তুষ্ট থাকলে তাকে ১০ রেটিং দিন, এতে ভবিষ্যতে সে আপনাকে আরো কাজ দিবে। ঠিক একইভাবে ক্লায়েন্টও আপনাকে একটি রেটিং এবং মন্তব্য দিবে যা আপনার প্রোফাইলে সারাজীবন থাকবে। ভবিষ্যতে অন্য ক্লায়েন্টরা এই রেটিং এবং মন্তব্যের উপর ভিত্তি করে কাজ দিবে। একবার রেটিং দেবার পর তা কখনওই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই ক্লায়েন্ট কাজ গ্রহণ করার পূর্বে তাকে জিজ্ঞেস করে নিন যে সে আপনার কাজে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট কিনা এবং আপনাকে ১০ রেটিং দিচ্ছে কিনা। যদি সে সন্তুষ্ট না হয় তাহলে আলোচনার মাধ্যমে বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করে দিন।

অর্থ তোলার উপায়সমূহ
একটি কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন করার পর আপনার পাওনা টাকা ফ্রিল্যান্সিং তাদের সার্ভিস চার্জ রেখে বাকিটা ওই সাইটে আপনার একাউন্টে জমা করে দেয়। তারপর মাস শেষে বা মাসের মাঝামাঝি সময়ে আপনি সর্বমোট টাকা বিভিন্ন উপায়ে দেশে নিয়ে আসতে পারেন। এখানে টাকা উত্তোলনের কয়েকটি কার্যকরী পদ্ধতিগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল:
ব্যাংক টু ব্যাংক ওয়্যার ট্রান্সফার
অর্থ তোলার একটি নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ উপায় হচ্ছে ওয়্যার ট্রান্সফার। এই পদ্ধতিতে মাস শেষে ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে টাকা বাংলাদেশে আপনার ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি এসে জমা হয়ে যাবে। তবে এই পদ্ধতিতে চার্জ একটু বেশি, প্রতিবার টাকা উত্তোলনে ৪৫ থেকে ৫৫ ডলার খরচ পড়বে। এই পদ্ধতিতে টাকা উত্তোলন করতে হলে আপনাকে নিম্নে উল্লেখিত তথ্যগুলো ফ্রিল্যান্সিং সাইটে প্রদান করতে হবে:
1. আপনার ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার, ব্যাংক এর ঠিকানা, ব্যাংক এর SWIFT Code ।
2. ফ্রিল্যান্সিং সাইটি যে দেশে অবস্থিত সেই দেশের একটি ব্যাংক এর নাম যা মধ্যবর্তী হিসেবে কাজ করবে। এজন্য আপনি আপনার ব্যাংক এ গিয়ে জেনে নিন তারা ওই দেশের কোন কোন ব্যাংক এর মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান করে থাকে। এবং
3. এরপর মধ্যবর্তী ওই ব্যংক এর Routing নাম্বার আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে যা আপনি ব্যাংকটির ওয়েবসাইট এ পেয়ে যেতে পারেন। ব্যাংক এর সাইটে না পেলে Google এ সার্চ করে পেয়ে যেতে পারেন অথবা আপনার ব্যাংক থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এই নাম্বারকে বলা হয় ABA Routing Number।

স্নে‍ইল মেইল চেক
এটি তুলনামূলকভাবে একটি ঝামেলামুক্ত কিস্তু সময়সাপেক্ষ পদ্ধতি। আপনার মোট আয় যদি ১০০ ডলারের এর উপর হয় তাহলে চেকের মাধ্যমে সাধারন চিঠিতে পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে প্রতিবার খরচ পড়বে মাত্র ১০ ডলার। তবে চিঠি আসতে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে। আর চেকটি আসবে ডলার-এ, তাই এটিকে টাকাতে রূপান্তর করতে হলে আপনার ব্যাংকের সাহায্য নিতে হবে।

পে-অনার ডেবিট কার্ড
উপরের উল্লেখিত দুটি পদ্ধতি থেকে সবচাইতে দ্রুত পদ্ধতি হচ্ছে Payoneer Debit Card। সম্প্রতি প্রায় সকল ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলো এই MasterCard সার্ভিসটি চালু করেছে। এই পদ্ধতিতে মাস শেষে আপনি টাকা খুবই দ্রুত পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে ATM এর মাধ্যমে উত্তোলন করতে পারেন। এজন্য এককলীন খরচ পড়বে ২০ ডলার আর মাসিক খরচ পড়বে ১০ থেকে ১৫ এর মত। ATM থেকে প্রতিবার টাকা উত্তোলনের জন্য খরচ পড়বে ২ থেকে ৩ ডলার। এজন্য প্রথমে ফ্রিল্যান্সিং ওই সাইটের মাধ্যমে Payoneer সাইটে একটি একাউন্ট করতে হবে। তারপর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আপনার ঠিকানায় একটি MasterCard পৌছে যাবে। কার্ডটি হাতে পাবার পর নির্দেশনা অনুযায়ী কার্ডটি সচল করতে হবে এবং ৪ সংখ্যার একটি গোপন পিন নাম্বার দিতে হবে। পরবর্তীতে এই নাম্বারের মাধ্যমে যেকোন ATM থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এখানে বলে রাখা ভাল বাংলাদেশে অনেকগুলো ব্যাংক এর ATM এই কার্ড সাপোর্ট করে না। স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক এর ATM থেকে আপনি সহজেই টাকা উত্তোলন করতে পারেন।

ওয়েব ডেভেলপারদের জন্য কয়েকটি তথ্য
অনলাইনে যত ধরনের কাজ পাওয়া যায় তার মধ্য সবচেয়ে বেশি কাজ হচ্ছে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে৷ ওয়েবসাইট তৈরি, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, ওয়েবসাইট ক্লোন, টেম্পলেট বা ওয়েবসাইটের জন্য ডিজাইন তৈরি করা, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও ইত্যাদি এর মধ্যে অন্তুভু্ক্ত৷ ওয়েবসাইট তৈরি করার ক্ষেত্রে স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে সবচাইতে বেশি ব্যবহার হয় পিএইচপি এবং ডাটাবেজ হিসেবে MySQL৷ পিএইচপি অত্যন্ত সহজ একটি ল্যাঙ্গুয়েজ, যা এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে শেখা সম্ভব৷ এ নিয়ে বাজারে প্রচুর বই পাওয়া যায়৷ আর গুগল-এ সার্চ করে আপনি প্রচুর কোড, টিউটরিয়াল, ওপেনসোর্স স্ক্রিপ্ট পেয়ে যাবেন৷ পিএইচপি এবং MySQL-এর সাথে HTML, Javascript, CSS, XML Jইত্যাদি বিষয়ের ওপরও ভাল জ্ঞান থাকতে হবে৷ এজন্য আপনি www.w3schools.com সাইটের সাহায্য নিতে পারেন৷
পিএইচপি এবং MySQL শেখার পর এবার নিজে কয়েকটি ওয়েবসাইট তৈরি করুন৷ সাইটের আইডিয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করুন এবং এক বা একাধিক ওয়েবসাইটের ক্লোন করার চেষ্টা করুন৷ এতে আপনি একটি ওয়েবসাইটে কী কী ফিচার থাকতে পারে, সে সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাবেন৷ ফ্রিল্যান্সিং সাইটে আপনি পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা হিসেবে এই কাজগুলো উল্লেখ করতে পারেন এবং ক্লায়েন্টকে আপনার তৈরি করা ওয়েবসাইটগুলোর স্ক্রিনশট দেখাতে পারেন৷
অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নতুন ওয়েবসাইট তৈরি না করে ক্লায়েন্টরা বিভিন্ন ধরনের ওপেন সোর্স স্ক্রিপ্ট পছন্দ করে৷ জনপ্রিয় কয়েকটি স্ক্রিপ্ট হচ্ছে osCommerce, ZenCart, Joomla, Drupal, Wordpressইত্যাদি৷ এই স্ক্রিপ্টগুলোকে পরিবর্তন করা, নতুন মডিউল বা ফিচার যোগ করা, ডিজাইন পরিবর্তন করা ইত্যাদি নিয়ে অসংখ্য কাজ পাওয়া যায়৷ আপনি শুধু এরকম এক বা একাধিক স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করতে পারেন৷ এমন অনেক সফটওয়্যার ফার্ম আছে, যারা কেবল Joomla বা sCommerce-এর ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে নিজের এবং দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির একটি শক্তিশালী মাধ্যম৷ এই পদ্ধতিতে দেশ প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে৷ বর্তমান যুব সমাজ যেখানে বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত, সেখানে আপনি নিজেই হয়ে উঠতে পারেন অন্যের চাকরিদাতা৷ খুবই সামান্য মূলধন আর কয়েকজন দক্ষ কর্মী নিয়ে আপনিও চালু করতে পারেন একটি সফটওয়্যার ফার্ম বা ডাটা এন্ট্রি হাউজ৷ এজন্য দরকার আপনার সাহস, দক্ষতা আর ফ্রিল্যান্সিং সাইটে ভাল একটি প্রোফাইল৷

শেষ কথা
ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কাজে ফ্রিল্যান্সারের স্বাধীনতা থাকে৷ ফ্রিল্যান্সারের ইচ্ছে মতো কাজ বেছে নেয়ার সুযোগ থাকে৷ একজন ফ্রিল্যান্সার নিজের সুবিধামতো সময় বিবেচনা করেও কাজ বেছে নিতে পারে৷ আর এই কাজের জন্য সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে, যেকোনো পেশার লোক বা চাকরিজীবী শুধু প্রোগ্রামিং বা সংশ্লিষ্ট কাজ শিখেই আউটসোর্সভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন৷ এখানে যোগ্যতার মাপকাঠী হচ্ছে আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের যে শাখায় কাজ করতে চান, সেই বিষয়ে আপনি কতটুকু জানেন৷ অন্য কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন নেই৷ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ধরনের কাজ খুবই উপযোগী৷
বলার অপেক্ষা রাখে না, নয়-এগারোর পর থেকে পুরো বিশ্বেই আইসিটি খাতের লোকেরা কর্মপরিধি সীমিত করে দিয়েছিল৷ তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে৷ পুরো বিশ্বের মতো এদেশেও কমপিউটার বিজ্ঞান বা কমপিউটার প্রকৌশলী অনুষদের ছাত্রসংখ্যা কমেছে৷ এই সময়ে আইসিটি খাতে কাজও কমে গিয়েছিল৷ এসব অনুষদের ছাত্রদের মধ্যে এক ধরনের হীনম্মন্যতা এখনো কাজ করে৷ আমাদের দেশের মতো দেশে যেখানে ভালো চাকরি বা কাজের পরিধি বেশ কম, সেখানে উন্নত বিশ্বে শুধু আইসিটি নয় যেকোনো অনুষদের ছাত্ররাই পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে নিজ নিজ বিষয় সংশ্লিষ্ট পার্টটাইম কাজ করে উপার্জন করতে পারে৷ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এ কাজ করে ছাত্ররা তাদের নিজ নিজ টিউশন ফি পরিশোধ করতে পারে৷ দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশে এ ধরনের কাজ প্রায় নেই বললেই চলে৷ অথচ আমাদের পাশের দেশ ভারতেও আইসিটি সংশ্লিষ্ট অনুষদে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ পাওয়া যায়৷ পড়াশোনার পাশাপাশি এ ধরনের কাজে প্রধান সুবিধা হচ্ছে ছাত্ররা নিজেদের ভবিষ্যতযোগ্যতা সম্বন্ধে সচেতন থাকতে পারবে৷ প্রযুক্তিভিত্তিক যেকোনো বিষয়েই যা খুব জরুরি৷
আমাদের দেশে ছাত্রদের জন্য ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং নতুন করে আশার সৃষ্টি করে৷ আইসিটির হাজার হাজার ছাত্রদের মধ্যে এমন হতাশা কাজ করে যে, আগের চেয়ে এই খাতে কাজ কমছে এবং এই কাজ কমার প্রবনতা কমাতে পারে অনলাইন ফ্রিল্যান্স৷ শুধু ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং করে নিজেই আইসিটিভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে এমন নজির খুব কম নয়৷ আর আমাদের পাশের দেশসমূহে ফ্রিল্যান্স খুব জনপ্রিয়৷ শুধু ভালো ইন্টারনেটের অভাবে আমরা অনেকদিন ধরেই এই খাত থেকে পিছিয়ে ছিলাম৷ যদিও ভালো ইন্টারনেট সংযোগের পুরো সুবিধা আমরা এখনো পাচ্ছি না৷

কেস স্টাডি - ০১

আউটসোর্সিং করে বাংলাদেশে অনেকেই বেশ আয় করছে



আমি এ. কে. এম. মোকাদ্দিম৷ বয়স ২৬ বছর৷ সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালরে সিএসই বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষে এখন একটি প্রাইভেট ফার্মে কাজ করছি৷
ফ্রিল্যান্স এখন আমার কাছে নেশার মতো৷ ২৫ বছর বয়স থেকে আমি ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের সাথে জড়িত৷ শুরুতে নির্দিষ্ট কারো কাছ থেকে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের ব্যাপারে শুনিনি৷ তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সময় কয়েকজন বড় ভাই পরামর্শ দিয়েছিলেন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং করতে৷ তবে আমার শুরু তারও অনেক পরে৷ তার আগে বাংলাদেশের কাজ করতাম৷
ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং শুরু করা বলতে শুরু নয়৷ শুরু করতে চাইলেই কেউ শুরু করতে পারে না৷ প্রথম প্রথম একটু সমস্যা হয়ই৷ কাজ পেতে একটু কষ্ট হয়৷ কারণ, কম রেটিং পাওয়া বা রেটিং ছাড়া কাউকে ক্লায়েন্টরা সহজে কাজ দিতে চায় না৷ আমিও অনেক পরে কাজ পেয়েছি৷ শুরুতে অনেক সময় ক্লায়েন্টের সাথে ঠিকমতো যোগাযোগ না করলে বা দেরি হলেও কাজ ছুটে যেত৷ ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং জগতের অনেক টার্মসও বুঝতাম না৷ তাই কমিউনিকেশনে একটু সমস্যা হতো৷ হয়ত ক্লায়েন্ট বলছে এক সফটওয়্যারের কথা, আর আমি ভাবছি অন্যটি৷ এরকম আরো অনেক সমস্যাই হয়েছে৷ তবে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং শুরুতেই যা সমস্যা৷ কিন্তু একবার ভালো রেটিং করতে পারলে বা পুরো ব্যাপারটি বুঝে গেলে আর সমস্যা হয় না৷ আমার ভালো রেটিং পাবার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি৷
ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং করে অনেকেই এখন বাংলাদেশে বসে আয় করছে৷ বাংলাদেশে বসে আয় করতে কোনো সমস্যা নেই৷ এক সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ছাড়া৷ কারণ, এদেশের মানুষের স্বপ্ন থাকে পড়াশোনা শেষে ব্যবসায় বা চাকরি করা ৷ আর ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং এগুলোর সাথে ঠিক মেলে না৷ বেশিরভাগ মানুষই ভাবে এটা একটি ক্ষণস্থায়ী কাজ৷ অনেকেই বুঝে না ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কী তবে আস্তে আস্তে পরিবর্তন হচ্ছে৷ ইদানীং অনেকেই এটাকে ভালো চোখে দেখছে৷
কাজশেষ হলে টাকা পাওয়া যায়৷ উন্নত বিশ্বের সুযোগ-সুবিধা কম বলে বাংলাদেশে টাকা আনা একটু ঝামেলার৷ কারণ, বাংলাদেশে paypal নেই৷ বেশিরভাগ পেমেন্ট হয় এর মাধ্যমে৷ টাকার জন্য থার্ড পার্টি সার্ভিস যেমন Xoom, Western Union দিয়ে টাকা আনতাম প্রথম দিকে৷ এখন অবশ্য ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা আনি৷
ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংকে পুরোপুরি পেশা হিসেবে বেছে নেয়া যায়৷ এতে মাসিক আয়ের কোনো ঠিক নেই৷ যদি সময়মত কাজ পাওয়া যায় আর ঠিকমত কাজ ডেলিভারি দেয়া যায়, তবে 800 থেকে 1200 ডলার আয় করা সম্ভব প্রতিমাসে৷ এটি নির্ভর করছে অভিজ্ঞতা ও সুনামের ওপর৷
ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং করতে চাইলে যে শুধু ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংই করতে হবে বা এর প্রোগ্রামিং জানতেই হবে এমন কোনো কথা নেই৷ কোনো কিছু না জানলে ডাটাএন্ট্রির মতো কাজ করা যেতে পারে৷ ঘরে বসে ইন্টারনেটে শুধু সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ছাড়াও গ্রাফিক্স ডিজাইন, এনিমেশন, পেইন্টিং, মার্কেটিং, ফ্যাশন ডিজাইনিং, ক্যাড, ফটোগ্রাফি, কনসাল্টিং, কাস্টমার সাপোর্ট ইত্যাদি কাজ করে আয় করা যায়৷ তবে শুধু কাজ পেলাম আর কাজ করলাম তা নয়৷ ফ্রিল্যান্সে আসলে ডেভেলপমেন্টের কাজ করা ছাড়া অন্যান্য কাজ যেমন ক্লায়েন্ট হ্যান্ডলিং, নতুন কাজ যোগাড়- এসব করার জন্য যথেষ্ট সময় দিতে হয়৷ এজন্য ভালোই সময় দিতে হয়৷ প্রতিদিন প্রায় ১২-১৪ ঘণ্টার মতো সময় দিতে হয়৷
ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ে রেটিং খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ রেটিংয়ের ব্যাপারে সবাইকেই মনোযোগী হতে হবে৷ তা না হলে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং না করাই ভালো৷ আমার রেটিং 10/10৷ আর www.script-lance.com -এ সর্বোচ্চ ৠাংকিং ছিল 221৷ বর্তমানে এটা কমে গিয়ে 191-এ নেমেছে৷ কারণ, আমি এখন বিভিন্ন সাইটে কাজ করছি৷ রেটিং বাড়াতে হলে টাইমলি বাগ ফ্রি সফটওয়্যার ডেলিভারি দিতে হবে, অবশ্যই চাহিদা পূরণ করতে হবে৷ এসব করলে রেটিং বাড়বে এতে কোনো সন্দেহ নেই৷ তারপরও সবকিছুই নির্ভর করে গ্রাহকের ওপর৷ কারণ রেটিং দেয়ার ক্ষমতা তার হাতে৷
কাজ করতে করতে অনেক মজার ঘটনাতো ঘটে৷ আমার ক্ষেত্রে তেমন কোনো মজার ঘটনা নেই আসলে৷ তবে মাঝে মাঝে আমি কোনো কোনো প্রকল্প প্রস্তাবনা দিলে হয়ত দেখতাম আমার কোনো বন্ধুও সেখানে প্রোপোজাল দিয়েছে, পুরোটাই অনিচ্ছাকৃত৷ কিন্তু একটা স্নায়ুযুদ্ধ ভর করে মনের মধ্যে৷ তবে এক্ষেত্রে পেশাদারিত্বের কোনো বিকল্প নেই৷ অন্যান্য দেশের ফ্রিল্যান্সাররা অনেক পেশাদার৷ আমরা সে তুলনায় পিছিয়ে আছি৷
বাংলাদেশে এটার সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল৷ এটা পুরোপুরি মেধা ও সৃজনশীলতার ব্যাপার৷ আমাদের দেশের ছেলেদের কোয়ালিটি অনেক ভালো৷ শুধু কাজে লাগাতে হবে৷ এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে৷ ইদানীং অনেক বাংলাদেশীই ফ্রিল্যান্সিংয়ে আসছে৷ এক বছর আগেও এর হার বেশ কম ছিল৷ ধীরে ধীরে এটি জনপ্রিয় হচ্ছে৷ তবে এ কাজের জন্য বিদ্যুত্ ও ইন্টারনেট অপরিহার্য অংশ৷ তাই এ দুটো বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ নেয়া উচিত৷
নতুন যারা ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং করতে চাচ্ছে তাদেরকে বলব তাড়াহুড়া না করতে৷ একটু সময় লাগতে পারে৷ তবে সফলতা অনিবার্য৷ লেগে থাকলে সফলতা আসবেই।

কেস স্টাডি - ০২

বাংলাশেফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের ভবিষ্যত্ খুবই উজ্জ্বল



আমি এ. এইচ. এম. শাহনূর আলম শাওন৷ চট্টগ্রারে সি, ইউ, ই, টি, থেকে সিএসই বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছি৷ আমার বয়স ২৬, এখন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং করছি৷
সর্বপ্রথম আমি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত একটি ফিচার পড়ে জানতে পারি ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে কাজ করে আয় করা সম্ভব৷ তখন থেকেই আমার চিন্তা ছিল কিভাবে এর মাধ্যমে সফল হওয়া যায়৷ যেই ভাবা সেই কাজ৷ বলা যায়, এর পর থেকে এক্ষেত্রে আমার অভিযানের শুরু৷ আমি প্রায় আড়াই বছর ধরে এই আউটসোর্সিংয়ের সাথে জড়িত৷
প্রথম যখন আমি কাজ শুরু করি, তখন আমার আশপাশে এমন কেউ ছিলো না, যার কাছে আমি নতুন কোনো সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে পারি৷ যার কারণে নিজেকেই সব সার্চ করে সমাধান বের করতে হতো৷ এতে করে অনেক সময় দেখা গেল, খুব ছোট একটা সমস্যায় আমাকে অনেক বেশি সময় খরচ করতে হয়েছে৷ শুরুতে কোনো গাইডলাইন পাইনি৷ তবে কাজ করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে৷
যে সমস্যাগুলো আমাকে মারাত্মকভাবে ভোগায় সেগুলো হলো-

০১. ধীরগতির ইন্টারনেট-যা আমাদের প্রোডাক্টিভিটি অনেকাংশে কমিয়ে ফেলে৷ যেমন ধরুন, আমাকে একটা সাইটের বাগ ফিক্সড করার জন্য বলা হলো, আর সময় দেয়া হলো ২ ঘণ্টা৷ কিন্তু ধীরগতির ইন্টারনেটের কারণে সাইটটি ব্রাউজ করে বাগ পয়েন্ট আউট করতেই আমার লেগে গেল ৯০ মিনিট৷ দ্রুতগতির ইন্টারনেট থাকলে একই কাজ ৩০ মিনিটে করা সম্ভব৷
০২ বিদ্যুত্ সমস্যা হচ্ছে আরেকটি প্রধান সমস্যা৷ ধরা যাক কোনো জরুরি কাজের ডেডলাইন হচ্ছে ৩ দিন এবং আমার সেটি ৩ দিনের মধ্যে শেষ করতে গেলে প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে কাজ করতে হবে৷ দেখা গেল পরবর্তী ৩ দিনে সব মিলিয়ে বিদ্যুত্ থাকল ১০ ঘণ্টা৷
ইন্টারনেটভিত্তিকপেমেন্ট (যেমন paypal) সিস্টেমের কোনো ব্যবস্থা না থাকাও একটা বড় সমস্যা৷ দেশে অর্থ আনার জন্য আমি Western Union Money Transfer এবং ব্যাংক টু ব্যাংক ওয়্যার ব্যবহার করি৷ তবে বিদেশ থেকে এখনো এদেশে অর্থ আনা খুব কষ্টসাধ্য একথা মনে হয় সবাই জানেন৷
যেকোনোসফল আউটসোর্সিংয়ের গড় আয় খুবই ভালো৷ কিন্তু আমি নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে চাই না৷ এখানে সবচেয়ে উপভোগ্য হচ্ছে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ৷ সময়ের ব্যাপারটা পুরোপুরি নিজের ইচ্ছের ওপর নির্ভর করে৷ কিন্তু আসল কথা হচ্ছে ডেডলাইনের মধ্যে কাজ শেষ করা৷
আমার রেটিং হচ্ছে চমত্কার৷ কিন্তু রেটিং এর বিষয়টা আসে তখন, যখন কেউ বিডিং সাইট থেকে কাজ নেয়৷ তবে যখন যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হয়ে যায় এবং কাজের গুণগত মান ঠিক রাখতে পারলে বিভিন্ন বিদেশী কোম্পানির সাথে সরাসরি কাজের চুক্তি করা যায়৷ আর রেটিং বাড়ানোর জন্য যেসব পথ অবলম্বন করতে হয় সেগুলো হলো : কাজের গুণগত মান ঠিক রাখা, কাজ চলার সময়ে বায়ারের সাথে ভালো যোগাযোগ রাখা, মার্জিত ভাষা ব্যবহার করা৷ প্রোগ্রামিং ছাড়া আরো অনেক কিছু করে ঘরে বসে আয় করা যায়৷ যেমন- ডাটা এন্ট্রি, সার্ভার মেনটেনেন্স এবং অনলাইন লিগ্যাল কনসালট্যান্সি৷
আউটসোর্সিংনিয়ে আসার ক্ষেত্রে তেমন কোনো মজার ঘটনা ঘটেনি৷ কিন্তু একটা লোকাল কাজ নিয়ে মজার ঘটনা ঘটেছিল৷
একদিন এক লোক এসে বলল, তার জন্য একটা শপ ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার বানাতে হবে এবং ওটা কী কী কাজ করবে তা বলল৷ সবশেষে সে বলল, আমি তোমার আব্বুর সাথে গল্প করছি, তুমি চটপট বানিয়ে ফেলো, যেন আমি যাওয়ার সময় নিয়ে যেতে পারি৷ সে মুর্হুতে ‍আমার ‍আব্বুকে বলতে ‍ইচ্ছে করছিল, আব্বু যেন ‍এমন ‍একটা গল্প শুরু করে যা শেষ হতে অন্তত ৪৫ দিন লাগবে৷
বাংলাদেশে আউটসোর্সিং ধারার ফ্রিল্যান্সিংয়ে ভবিষ্যত্ খুবই ভালো৷ কিন্তু আমার কাছে ভবিষ্যত্ যে পরিমাণে ভালো মনে হচ্ছে সে তুলনায় অগ্রগতি মনে হচ্ছে খুবই ধীর৷ অর্থাত্ আমরা খুবই ভালো ভবিষ্যতের দিকে খুবই ধীরগতিতে যাচ্ছি৷ এই গতিটাকে বাড়ানোর জন্য ন্যুনতম যা দরকার, তা হলো দ্রুতগতির ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করা, বিদ্যুত্ সমস্যার সমাধান করা এবং আউটসোর্সিংয়ে সুযোগগুলোর ব্যাপারে সবার মাঝে সচেতনতা তৈরি করা৷ বর্তমানে আউটসোর্সিংয়ের সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকেও এগিয়ে আসতে হবে৷
নতুনদের উদ্দেশে যা বলার তা হলো- একটা ভালো চাকরির জন্য যা জানা দরকার, একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে হলে তার চেয়ে অনেক বেশি জানা দরকার৷ সুতরাং ফ্রিল্যান্সার হতে চাইলে নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করতে হবে৷ আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, নতুন অনেকে জিজ্ঞেস করে, বিড করি, কিন্তু কাজতো পাই না৷ সে ক্ষেত্রে যা করতে হবে তা হলো- বিডিংয়ের ধরন পরিবর্তন করা৷ শুধু “I am interested one” অথবা “I want to do this” লিখে বিড করলে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম৷ একটা ভালো Bid Response-এ অন্তত এতটুকু থাকতে হবে যা দেখে একজন বায়ার বুঝতে পারবে যে বিডার কাজটি করতে সক্ষম, আর তখনই কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।

No comments:

Post a Comment